অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে দেশের রাজনীতিতে উত্তাপ-উত্তেজনা ততই বাড়ছে। বিশেষ করে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধীদল বিএনপির মধ্যে বাকযুদ্ধ চলছে।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকার তথা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে।
আর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও তার দলের নেতারা বলছেন বর্তমান সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। খালেদা জিয়া একাধিকবার বলেছেন শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনে তার দল অংশ নেবে না।
এমনকি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে দেশে কোনো নির্বাচন তারা হতেও দেবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। এখনও পর্যন্ত প্রত্যেক দলই তাদের দাবির পক্ষে অনঢ় অবস্থানে রয়েছে।
সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে পরিষ্কার করে বলেছেন, আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ীই হবে। সংবিধান অনুয়ায়ীই নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হবে। নির্বাচনে অংশ না নিয়ে যারা প্রতিহত করার চেষ্টা করবে জনগণ তাদেরকে প্রতিহত করবে।
এমনকি গত বুধবারও তিনি পুলিশ সদস্যদেরকে নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের নামে যারা দেশে সহিংসতা সৃষ্টি করবে তাদেরকে কঠোর হাতে দমন করতে হবে।
এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ যদি আবারো ৫ জানুয়ারির মতো আরেকটি নির্বাচন করতে চায় তাহলে বিএনপি কী করবে? নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি কি বিএনপি আদায় করতে পারবে?
অথবা আওয়ামী লীগ যদি শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে বিএনপি কি সেই নির্বাচন ঠেকাতে পারবে? নাকি শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচনে অংশ নেবে?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের টার্গেট হলো যেকোনো ভাবে আগামীতে আবার ক্ষমতায় আসা। এমন নির্বাচন সরকার দেবে না, যে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে খালেদা জিয়া দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন।
মোট কথা বর্তমান সরকার বিএনপিকে আর ক্ষমতায় আসতে দেবে না। এজন্য যা যা করা দরকার আওয়ামী লীগ সবই করবে।
রাজনীতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগের টার্গেট হলো বিএনপিকে জাতীয় পার্টির মতো পঙ্গু করে দেয়া। আগামীতেও যদি বিএনপি ক্ষমতার বাইরে থাকে তাহলে নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা চলে আসবে।
সিনিয়র নেতারা অন্য দলে যোগ না দিলেও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়বে। আর মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দল ছেড়ে অন্য কোনো দলে যোগ দেবে। এভাবে দুর্বল হয়ে পড়বে বিএনপি। এক সময় দেখা যাবে বিএনপির অবস্থাও এরশাদের জাতীয় পার্টির মতো হয়ে যাবে।
তাদের মতে, অস্থিত্ব টিকিয়ে রাখতে বিএনপির সামনে এখন একটিই মাত্র পথ। আর সেটা হলো আন্দোলনের মাধ্যমে নির্দলীয় সরকারের দাবি আদায় করা। কারণ, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে অংশ নিলে বিএনপি ৫০ টির বেশি আসন পাবে না কিংবা দেয়া হবে না।
এখন দেখার বিষয় বিএনপি কোন পথে হাঁটে। শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে নাকি আন্দোলনের মাধ্যমে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করবে।