অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
লাখো নারী-পুরুষের জীবন-রক্ত ও ইজ্জতের বিনিময়ে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পর পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ। পেয়েছে আলাদা ভূখন্ড ও সীমানা। নিজস্ব পতাকা ও মানচিত্র। প্রতিবেশি দেশ হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভারত বাংলাদেশকে সহযোগিতা করেছে। এ সহযোগিতার জন্য অবশ্য স্বাধীনতার পর থেকে এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতকে মূল্যায়ন করে যাচ্ছে। প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ভারতের সেনা কর্মকর্তাদেরকে সম্মাননাসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত করা হচ্ছে।
স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকে বিশ্বের মানচিত্রে একটি স্বাধীন দেশে হিসেবে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্ববাসী বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে চিনে। কিন্তু, বিগত ৪৬ বছরে প্রতিবেশী দেশ ভারতের আচার-আচরণ থেকে প্রতিয়মান হয় তারা বাংলাদেশকে ভারতের একটি অঙ্গরাজ্য হিসেবে দেখে। বিভিন্ন সময় ভারতের একাধিক মন্ত্রী-এমপি প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন যে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে কোনো সীমানার দরকার নেই।
এমনকি আওয়ামীপন্থী কিছু বুদ্ধিজীবীদেরকেও মাঝে মধ্যে ভারতের সুরে কথা বলতে শুনা যায়। তারাও বিভিন্ন সময় সভা-সমাবেশে দুই দেশের সীমান্ত থেকে কাঁটাতারের বেড়া তুলে দেয়ার প্রস্তায় দেয়। পরিকল্পিতভাবেই তারা এসব প্রস্তাব দিয়ে বিতর্কের জন্ম দেয়।
সর্বশেষ ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে অভিন্ন ভিসা ও মুদ্রার প্রবর্তনের প্রস্তাব দিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী তথ্য উপদেষ্টা ও আওয়ামী ঘরনার সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরী।
শুক্রবার ভারতের আগরতলায় রবিন্দ্র শতবার্ষিকীর একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ইকবাল সোবহান চৌধুরী ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে অভিন্ন ভিসা চালু ও মুদ্রা প্রবর্তনের প্রস্তাব দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইকবাল সোবহান চৌধুরী বাংলাদেশের মিডিয়া পাড়ায় একজন সুবিধাবাদী লোক হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। নীতি-নৈতিকতার চেয়ে তিনি সব সময় নিজের স্বার্থটাই বড় করে দেখেন বলে সাংবাদিক সমাজের অভিযোগ।
অভিযোগ রয়েছে, সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার শুধু ইকবাল সোবহান চৌধুরীর জন্যই হচ্ছে না। সাংবাদিকদের বড় একটি অংশকে নিয়ন্ত্রণ করেন ইকবাল সোবহান। সাগর-রুনি হত্যার পর যখন বিচারের দাবিতে সাংবাদিকরা মাঠে শক্ত অবস্থান নেন। তখন সরকার সাংবাদিকদের বিভক্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে ইকবাল সোবহান চৌধুরীকে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা পদের অফার করে। ইকবাল সোবহানও সরকারের এ প্রস্তাব লুফে নেন। ইকবাল সোবহান চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা হওয়ার পর থেকেই সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে গড়ে উঠা আন্দোলনে ধীরগতি নেমে আসে। দুয়েকটি প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করলেও এগুলো স্রেফ লোক দেখানো। যার কারণে আজ পর্যন্ত সাগর-রুনি হত্যার বিচারের কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না।
ভারতে গিয়ে দেয়া ইকবাল সোবহানের এ বক্তব্য নিয়ে এখন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সর্বমহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সিনিয়র সাংবাদিকরা কঠোর সমালোচনা করছেন।
অনেকেই বলছেন, ইকবাল সোবহানের কোনো নীতি-আদর্শ ও দেশপ্রেম নেই। যার কাছ থেকে সুবিধা পান ইকবাল সোবহান তার কথাই বলেন। হয়তো ভারত গিয়ে বিশেষ কিছু সুবিধা পেয়েছেন, যার কারণে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে অভিন্ন ভিসা ও মুদ্রা চালুর প্রস্তাব দিয়েছেন। ইকবাল সোবহানরা সুযোগ পেলে দেশের সীমানাও মুছে ফেলবেন।