অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
১৯৯৯ সালের নভেম্বর মাসে বিএনপি-জামায়াত-জাতীয় পার্টি ও ইসলামী ঐক্যজোটের সমন্বয়ে চারদলীয় জোট গঠিত হয়েছিল। তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের লক্ষ্যে এই চারটি দল জোটবদ্ধ হয়ে তখন আন্দোলন করেছিল। ২০০৯ সালের পর ধীরে ধীরে জোটের পরিধি বাড়তে থাকে। ২০১৫ সালে এসে ২০ দলীয় জোটে পরিণত হয়।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করার পরই বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটকে দুর্বল করার কৌশল গ্রহণ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ লক্ষ্যে তারা প্রথমেই টার্গেট করে জামায়াত-শিবিরকে।
ওই সময় যতটুকু জানা গেছে, জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলা দেয়ার আগে জোট ভেঙ্গে আলাদা হয়ে যাওয়ার জন্য একাধিক বার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। জোট না ভাঙ্গাও যুদ্ধাপরাধের মামলা দেয়ার অন্যতম একটি কারণ। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলে জামায়াতের একাধিক শীর্ষ নেতাকে ফাঁসি দিয়েও যখন দেখলো যে দলটি জোট ছাড়ছে না, তখন আদালতের মাধ্যমে সরকার জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে। যাতে দলীয় প্রতীকে আর জোটবদ্ধ হয়ে সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিতে পারে।
এছাড়া বিগত ৯ বছর যাবত জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার-হয়রানিতো আছেই। মোট কথা বিএনপি থেকে জামায়াতকে আলাদা করার জন্য যা যা করার সব প্রক্রিয়ায় সরকার অবলম্বন করেছে।
দলের নিবন্ধন বাতিল হলেও স্বতন্ত্রভাবে যেহেতু নির্বাচন করতে কোনো বাধা নেই, তাই স্বতন্ত্র প্রতীকেই আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত। বিভিন্ন গণমাধ্যম জামায়াতের নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে ধারাবাহিক রিপোর্টও করতেছে।
এদিকে, জামায়াতের নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে জানার পরই নড়েচড়ে বসেছে সরকার। হঠাৎ করেই দলের অধিকাংশ শীর্ষ নেতাকে গ্রেফতার করেছে।
মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরকে তারা গ্রহণ করবে না।
কমিশনার মাহবুব তালুকদারের কথা মতে, স্বতন্ত্রভাবে জামায়াতের প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আগামী নির্বাচনে যাতে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসতে না পারে সেই ব্যবস্থাই করতে চাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। বৈধ যেকোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থীর স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার অধিকার আছে। নির্বাচন কমিশন যেটা বলেছেন, সেটা সম্পূর্ণ সংবিধান পরিপন্থী। তারা মূলত সরকারের এজেন্ডাই বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছেন। কারণ, জামায়াতকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে না পারলে বিএনপিকে ঘায়েল করা যাবে না।
Discussion about this post