অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
অবকাশকালীন ছুটি কাটিয়ে আদালতের এজলাসে আর বসা হলো না প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার। সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের পরামর্শের আলোকেই প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে বাধ্যতামূলক ছুটি দিয়েছে সরকার। কিছু দিন আগে বিচারপতি মানিক একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, প্রধান বিচারপতিকে যেন আর আদালতে বসতে দেয়া না হয়। তিনি আদালতে বসতে পারলেই দুইটি কাজ করবে। একটি হলো ১৫৪ জন এমপিকে অবৈধ ঘোষণা করবে। দ্বিতীয় হলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনবে।
আর সরকারের কাছেও এ তথ্যটা ছিল যে, প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা ছুটির পর এজলাসে বসে প্রথম সপ্তাহেই বিনাভোটে নির্বাচিত ১৫৪ জনকে এমপিকে অবৈধ ঘোষণা করবেন। তাই ছুটি শেষে এজলাসে বসার আগেই তাকে বাধ্যতামূলক ছুটি দিয়েছে সরকার।
অ্যানালাইসিস বিডির অনুসন্ধানে জানা গেছে, সরকারের একটা পক্ষ মনে করছে প্রধান বিচারপতিকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর কারণে বিপদ কেটে গেছে। সংসদ ভেঙ্গে যাওয়ার যে ভয়টা ছিল সেটা আর নেই। এখন নিশ্চিন্তেই মেয়াদের বাকি সময়টাও পার করা যাবে।
তবে, সরকারের বড় একটা অংশ এখনও চরম অস্বস্তি ও ভয়-আতঙ্কের মধ্যে আছে। তারা মনে করছেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা রাষ্ট্রের সামগ্রীক বিষয়ের ওপর যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন সেটা তার মাথা থেকে আসেনি। পরিকল্পিতভাবেই তিনি সরকারের বিগত ৯ বছরের সকল ব্যর্থতা রায়ের পর্যবেক্ষণে তুলে ধরেছেন। এর পেছনে অন্যকোনো শক্তির হাত রয়েছে। বিশেষ করে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এবং সরকারের ভেতর থেকেই একটি অংশ জড়িত আছে।
তাদের মতে, প্রধান বিচারপতি ছিলেন দাবার গুটি। শুধু তাকে চাপ প্রয়োগ করে ছুটিতে পাঠানোর মাধ্যমেই সংকট কেটে যাবে না। তাকে মাঠে নামিয়ে যারা পেছন থেকে খেলছে তারাতো আর মরে যায়নি। তাদের খেলা বন্ধ হয়নি। প্রধান বিচারপতিকে চাপ প্রয়োগ করে ছুটিতে পাঠানোর কারণে তারা এখন প্রতিশোধের নেশায় মেতে উঠবে। সংসদ ভেঙ্গে গেলে আওয়ামী লীগের যে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল, তারা এখন এরচেয়ে আরও বেশি ক্ষতি করতে পারে। যার খেসারত হয়তোবা দলকে আরও কয়েক যুগ দিতে হতে পারে।
Discussion about this post