অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
চালের বাজারে লাগা আগুন কোনোভাবেই নেভাতে পারছে না সরকার। দিন যত যাচ্ছে আগুন আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। দাউ দাউ করে জ্বলা আগুনে পুড়ে মরছে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিশেষ করে নিম্ন মধ্যবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষের শরীরের ৭০ ভাগই পুড়ে গেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চালের বাজারে লাগা আগুন আরও কিছু দিন স্থায়ী হলে সব কিছু পুড়ে দেশে বড় ধরণের বিপর্যয় সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
সরকারের দাবি, বাজারের আগুন নেভানোর মতো যথেষ্ট পরিমাণ চাল মজুত আছে। চালের কোনো সংকট নেই। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী ও মিল মালিকরা পরিকল্পিতভাবে বাজারে এ সংকট সৃষ্টি করেছে। খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বার বার বলছেন চাল নিয়ে চালবাজি শুরু হয়েছে। তিনি ব্যবসায়ীদেরকে একাধিকবার হুশিয়ারও করেছেন। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদও হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছেন। খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেছেন, চাল নিয়ে কাউকে খেলতে দেয়া হবে না।
কিন্তু, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে কিছুতেই সরকারের নিয়ন্ত্রণে আসছে না চালের বাজার। সরকারের হুমকি ধমকিকে পাত্তাই দিচ্ছে না ব্যবসায়ীরা।
দেশে চাল সংকট নেই সরকারের পক্ষ থেকে এমন দাবি করা হলেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি গুদামে পর্যাপ্ত পরিমাণ চাল মজুত নেই। ব্যবসায়ীরা জানে, কম দামে বাজারে ছাড়ার মতো পর্যাপ্ত পরিমাণ চাল সরকারের কাছে নেই। তাই তারা এ সুযোগটিকে কাজে লাগাচ্ছে।
জানা গেছে, বর্তমানে দেশে খাদ্যের ঘাটতি রয়েছে। যদিও সরকার বিষয়টি ধামচাপা দিয়ে যাচ্ছে। যে কয়টি দেশ থেকে সরকার চাল আমদানি করার চুক্তি করেছিল, এখন পর্যন্ত একটি দেশ থেকেও চাল আসেনি। সেজন্য খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম মিয়ানমার গিয়েছিলেন চালের জন্য। সেখান থেকেও তিনি খালি হাতে ফিরেছেন। যদিও সংসদে দাবি করেছেন যে চুক্তি করে এসেছেন। এছাড়া ভারতও আপাতত বাংলাদেশে চাল রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। সব মিলিয়ে চাল নিয়ে সরকার এখন চরম সংকটের মধ্যে পড়েছে।
এদিকে, ওএমএস বা খোলা বাজারে ১৫ টাকা কেজি দরে যে চাল বিক্রি হতো, সেই চাল আজ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি শুরু করেছে সরকার। সরকার পরিচালিত খোলা বাজারে চাল বিক্রি এখন দিগুণ দাম হয়ে গেছে।
খোলা বাজারের চালের দাম দিগুণ হয়ে যাওয়ায় চরম সংকটে পড়েছে হতদরিদ্র মানুষ। এত দিন খোলা বাজারের চাল যারা কিনতো তাদের মধ্যে এখন চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের ভাষায় ‘সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী ও মিল মালিকরা পরিকল্পিতভাবে চালের দাম বাড়িয়েছে। দেশে কোনো চালের সংকট নেই।’ তাহলে, সরকারি পরিচালনায় খোলাবাজারে যে চাল বিক্রি হয় সেটা নিয়ন্ত্রণ করছে কোন সিন্ডিকেট? খোলাবাজারের চালের দাম দিগুণ হলো কেন?
তাদের মতে, লুকুচুরি না করে চালের বিষয়ে সরকারকে এখনই জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায় পরবর্তীতে সংকট আরও জটিল আকার ধারণ করবে।
কেউ কেউ বলছেন, দেশে চালের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। সরকার এটাকে ধামচাপা দিতে চাচ্ছে। তা না হলে খোলা বাজারে চালের দাম বাড়ার কথা নয়।
Discussion about this post