অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী, অন্যান্য এমপি-মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতারা বিগত ৮ বছরের উন্নয়নের বাণী বেশ ফলাও করেই প্রচার করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন সব সভা-সমাবেশেই বিগত দিনের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরছেন। তিনি গতকাল মঙ্গলবারও বলেছেন, দেশের জনগণ তার সরকারের উন্নয়নের সুফল পেতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষায় স্বাধীনতার পর এত উন্নয়ন দেশে আর কখনো হয়নি। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার জন্য আওয়ামী লীগকে আবারো ক্ষমতায় আসা দরকার বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাপক উন্নয়নের দাবি করা হলেও জনগণ মনে করে এসব সরকারের চাপাবাজি। সরকারের উন্নয়ন বক্তৃতা-বিবৃতিতেই সীমাবদ্ধ। রাস্তায় বের হলে সরকারের উন্নয়নের কোনো চিত্র চোখে পড়ে না।
অল্প বৃষ্টিতেই পানির নিচে তলিয়ে যায় রাজধানী ঢাকা। আর কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি হলে রাজধানীর অলিগলি থেকে প্রধান সড়ক সর্বত্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। খানাখন্দে ভরা এই সড়কে যানবাহনতো দূরের কথা হাটাও যায় না। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর অধিকাংশ রাস্তাই এখন পানির নিচে। সীমাহীন ভোগান্তি নিয়ে নগরবাসীকে রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে। এছাড়া, সড়কের পিচ ঢালাই, ইট, খোয়া, বালু উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলেই এসব জায়গায় পানি জমে যায়। এসব কারণে রাস্তায় সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট।
সড়কের এই বেহাল দশায় সরকারের ওপর সাধারণ মানুষ প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। একটু বৃষ্টি হলে গলির ভেতরের রাস্তাগুলোতেও হাটা যায় না। তারপর বৃষ্টির পানির সঙ্গে ড্রেনের ময়লা যোগ হয়ে দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু, এসব সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের চোখে পড়ছে না। সাধারণ মানুষের এত দুর্ভোগের পরও সরকার তার উন্নয়নের বাণী প্রচার করে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন-আওয়ামী লীগ আর কত দিন ক্ষমতায় থাকলে রাজধানীবাসীর এ ভোগান্তি শেষ হবে?
তারপর আরেক দুর্ভোগের নগরী হল দেশের একমাত্র বন্দর নগরী হিসেবে খ্যাত চট্টগ্রাম। ওই এলাকার অবস্থা আরও খারাপ। চট্টগ্রামে মানুষের দুর্ভোগ এখন বর্ণনাহীন। পুরো চট্টগ্রামই পানির নিচে। নগরীর মহাসড়ক দিয়ে অফিসে যাতায়াতের জন্য সরকারি কর্মকর্তারা নৌকা কিনেছেন। চট্টগ্রামের কর অঞ্চল-৪ এর কর্মকর্তাদের নৌকা কেনার খবরও সংবাদ মাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা যাতে অফিসে যাতায়াত করতে পারেন সেজন্যে সরকারি খরচে এই অফিসের জন্যে দুটো নৌকা কেনা হয়েছে। ওই অফিসেরই একজন দারোয়ান প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে কর্মকর্তাদের অফিসে নিয়ে যান ও বাড়িতে পৌঁছে দেন। এছাড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন অফিস আদালতে পানি ঢুকে যাওয়ার কারণে ব্যবসা বাণিজ্য ও অফিস আদালতের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এসবকে এখন সাধারণ মানুষ সরকারের উন্নয়নের সুফল বলে আখ্যা দিচ্ছে।
Discussion about this post