বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলি ইতোমধ্যেই ভোট যুদ্ধে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় কাছাকাছি আসার সাথে সাথে দেশের রাজনীতির পরিবেশও বেশ উষ্ণ হচ্ছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখনই কোনো জনসমাবেশে উপস্থিত হচ্ছেন বিশেষ করে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনের সময়কার সমাবেশে তিনি তার নির্বাচনী প্রতীক নৌকার পক্ষে ভোট চাইছেন । আর তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও তার দল বিএনপিও পিছিয়ে নেই। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলো বলেছে যে, বিএনপি সারা দেশে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম বাছাই শুরু করেছে এবং নির্বাচিত হবার ক্ষেত্রে তাদের সম্ভাবনার বিষয় যাচাই করছে।
বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী ২০১৯ সালের জানুয়ারির মধ্যে অনুষ্ঠিতব্য আগামী সাধারণ নির্বাচন নিয়ে অবশ্য গভীর অনিশ্চয়তা ও ভয়ভীতি রয়েছে। এখনো এটি স্পষ্ট নয় যে নির্বাচনটি কীভাবে অনুষ্ঠিত হবে? এটি কি সব দলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে হবে নাকি ৫ জানুয়ারির মত একতরফা হবে।
যদিও শাসক দলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বলছে যে, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মতো আগামী সংসদ নির্বাচন বয়কট করা হবে না, তবে তারা এমন একটি শর্তের কথা বলছে যাতে নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ এবং নির্বাচন সময়কালের এক সহায়ক সরকারের অধীনে হয়। এক্ষেত্রে যুক্তি দেখানো হয় যে, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে না।
বিএনপি আগামী নির্বাচনে আসলেই অংশ নেবে কি না তা এখনো স্পষ্ট নয়। অথবা ১১শ সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন কোন অরাজক অবস্থা দেখা দেয় কিনা সেটিও বলা যাচ্ছে না যেটাকে অজুহাত করে ভিন্ন কিছু হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বাংলাদেশ ৫ জুনের মত আরেকটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের মতো অবস্থায় নেই। দেশের শান্তি ও স্থিতি মূলত কীভাবে আগামী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তার উপর নির্ভর করে। লোকজন এখন নানাভাবে জানতে চাইছে যে, ৫ জানুয়ারী ২০১৪ সালের নির্বাচনের মতো দেশে আবার অরাজক বা হট্টগোল অবস্থা ফিরে আসবে কিনা।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অবশ্য বলার চেষ্টা করছে যে, নির্বাচন কমিশনের অধীনেই ভোট অনুষ্ঠানের যাবতীয় কর্মকান্ড পরিচালিত হবে। বর্তমান আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন নবম সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার পর এই সংবিধানে “সহায়ক সরকার” এর কোন বিধান নেই।
অতীতে দায়িত্ব পালনকারী সিইসি, নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন পর্যবেক্ষক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ সংশ্লিষ্ট সবাই অবশ্য এই মত পোষণ করেন যে, শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশন দিয়ে নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করা সম্ভব হতে পারে না। সরকারি প্রশাসন যন্ত্রের সমর্থন ছাড়া নির্বাচনকে মুক্ত, অবাধভাবে অনুষ্ঠিত করা এক প্রকার অসম্ভব।
সহকারী রিটার্নিং অফিসার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়াও নির্বাচন কমিশনের যেখানে ৬ লাখ ৪০ হাজার পুলিং অফিসারের প্রয়োজন হয় সেখানে কমিশনে সাকুল্যে ৩ হাজারের মতো জনশক্তি রয়েছে। ফলে কমিশনকে ভোট পরিচালনার জন্য একটি বড় সংখ্যক কর্মকর্তা নিতে হয়, প্রধানত সরকারী সংস্থাগুলো থেকে ।
রিটার্নিং অফিসাররাই নির্বাচনের আয়োজন করার জন্য প্রায় সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব ভোগ করেন। কিভাবে নির্বাচন হবে এটা মূলত তাদের উপর নির্ভর করে । নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, কোনও অনিয়ম দেখা গেলে রিটার্নিং অফিসাররা মাঝ পথে সে নির্বাচন বাতিল করার ক্ষমতা রাখেন।
কিন্তু কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সাধারণ নির্বাচনে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) উপরই রিটার্ণিং অফিসারের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। আর এটি ব্যাপকভাবে মনে করা হয় যে, ডিসিদের নিয়োগ দেয় সরকার। ক্ষমতাসীন দলের ইচ্ছা অনুযায়ী তারা সাধারণত নিয়োগপ্রাপ্ত হন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, নির্বাচনের ফলাফলের সময় রিটার্নিং অফিসারদের উপর নির্বাচন কমিশন কতটা কর্তৃত্ব প্রয়োগ করতে পারেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য- এই উভয় দেশের স্থানীয় মিশন প্রধানরা ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনে এসেছেন এবং তারা তাদের এই বার্তা প্রদান করেছেন যে পরবর্তী নির্বাচনটি সবাইকে নিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে। তারা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী মত কোনও নির্বাচন দেখতে চান না।
ঢাকায় ব্রিটিশ হাই কমিশনার আলিসন ব্লেক ৬ই জুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সাথে দেখা করেন এবং পরের নির্বাচনের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের অবস্থান সম্পর্কে তাকে জানান।
তিনি বলেন, “আমরা নিশ্চিত হতে চাই যে আগামী নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দল অংশ নেবে এবং আমরা এ জন্য যারা কাজ করছে তাদের শেষ পর্যন্ত সমর্থন করব”। ব্লেক ইসি সচিবালয়ের সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
৩১ মে তারিখে, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মেসিয়া বার্নিকাট সিইসি’র সাথে সাক্ষাত করেন এবং তাকে জানান যে ৫ জানুয়ারির মত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না।
এছাড়া, ইউএনডিপির কর্মকর্তারাও সিইসি’র সাথে সাক্ষাত করেছেন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন
পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের আগে, আওয়ামী লীগ সরকার তার বিশ্বস্ত এম নূরুল হুদাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করেছে। কমিশন পুনর্গঠন করতে গিয়ে নাটকীয় না হলেও ধারাবাহিক নানা ঘটনা ঘটেছে। ।
আওয়ামী লীগের প্রাক্তন নেতা রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, সম্ভাব্য নির্বাচন কমিশনারদের অনুসন্ধানের জন্য একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেন এবং অনুসন্ধান কমিটি একটি প্যানেল প্রকাশ করে।
প্রস্তাবিত বেশিরভাগ সম্ভাব্য নির্বাচন কমিশনারের নাম আসে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগীদের মধ্য থেকে।
অনুসন্ধান কমিটি নাম জমা দেয়ার সেই সন্ধায় রাষ্ট্রপতি অস্বাভাবিক দ্রুততায় নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দিয়ে দেন।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দ্বারা প্রস্তাবিত সম্ভাব্য নির্বাচন কমিশনারদের নাম প্রকাশ করার জন্য সার্চ কমিটির কাছে সার্বজনীন আকাঙ্ক্ষা থাকলেও কমিটির লোকেরা জনগণের সেই ইচ্ছাকে গুরুত্ব দেয়নি।
বিএনপির অবস্থান
নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠনের পর পরই বিএনপি বলেছে, নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ইচ্ছার প্রতিফলন হয়েছে।
দলটি অভিযোগ করে যে, নিয়োগপ্রাপ্ত সিইসি হুদা ‘জনতার মঞ্চের’ সংগঠক ছিলেন, যার ফলে জনসাধারণের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই তার সম্পর্কে একটি নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হয়।
সিইসি নিয়োগের ক্ষেত্রে কেন অনুসন্ধান কমিটি বা রাষ্ট্রপতি এই বিষয়ে নজর রাখলেন না তা নিয়ে বিএনপি বিষ্ময় প্রকাশ করে।
দলটি কে এম নূরুল হুদাকে একজন বিতর্কিত প্রাক্তন আমলা বলে উল্লেখ করে বলেছে, তার নেতৃত্বে কমিশন নিরপেক্ষভাবে এবং পক্ষপাতহীনভাবে কাজ করতে পারবে না।
স্থায়ী কমিটির সভা শেষে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ” এসব কারণে, কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বে মুক্ত, ন্যায্য, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন সম্ভব নয়।”
ফখরুল দ্য ডেইলি স্টারের একটি রিপোর্টের উত্ধৃতি দিয়ে বলেন, “চাকরি জীবনে তিনি কুমিল্লা এবং ফরিদপুরের ডেপুটি কমিশনার ছিলেন। ২০০১ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ক্ষমতায় আসার পর, তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।
নুরুল হুদা বলেন যে, তিনি সেই সময় যুগ্ম সচিব ছিলেন। তিনি তখন সরকারের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে একটি আইনি লড়াইয়ে জয়ী হন।
এ বক্তব্য প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, “২০০৮ সালে তিনি তার পক্ষে রায় পাবার আগে ২০০৬ সালে অবসর গ্রহণ করেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাকে ভুতাপেক্ষ বা পূর্ববর্তী সময় থেকে কার্যকারিতা দিয়ে সচিব করে”।
“এই তথ্য দিয়ে,” ফখরুল বলছেন, “আমাদের দলের বিরুদ্ধে তিনি সংক্ষুব্ধ হতে পারেন। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ সরকার যখন পূর্ববর্তী সময় থেকে কার্যকারিতা দিয়ে তাকে সচিব করেছে স্বাভাবিকভাবে তাদের প্রতি তিনি সহমর্মিতা দেখাবেন।”
তিনি বলেন, “এই দ্বিমুখী স্বার্থ সংঘাতে তিনি কতটা নিরপেক্ষ থাকতে পারবেন তা নিয়ে জনগণের মধ্যে একটি যৌক্তিক প্রশ্ন রয়েছে। “
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সর্বোপরি, তার বিরুদ্ধে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক থাকাকালে ১৯৯৬ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকার বিরোধি প্ল্যাটফর্ম, জনতার মঞ্চের সংগঠক হবার অভিযোগ রয়েছে। অথচ কোনও সরকারি কর্মচারী রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশ নিতে পারেন না । এই ধরনের রাজনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িতরা সরকারি আইন লঙ্ঘনকারী হিসাবে চিহ্নিত হন এবং এটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ“।
ফখরুল বলেছেন, “এই কারণে, মানুষের মধ্যে সিইসির ব্যাপারে একটি নেতিবাচক ধারণা স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে উঠেছে। এটা খুবই রহস্যময় যে অনুসন্ধান কমিটি বা মাননীয় রাষ্ট্রপতি বিষয়টি আমলে নেননি। ”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, নুরুল হুদা একজন “বিতর্কিত আমলা। আমরা মনে করি এই বিতর্কিত প্রাক্তন সরকারি কর্মচারীর নেতৃত্বে কোনও প্রতিষ্ঠান পক্ষপাতিত্বহীনভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে না।”
বিএনপি নেতা বলেন, “এই ধরনের নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের পক্ষের দাবির যৌক্তিকতা বজায় রেখেছে।”
আওয়ামী লীগের অবস্থান
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিএনপির অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে পুনর্গঠিত ইসিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছে, একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবে এই নির্বাচন কমিশন।
সিইসির নিয়োগের অল্প সময়ের মধ্যে, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ তাঁর নিয়োগকে উদযাপন করেন। তাঁরা সিইসির পৈত্রিক বাড়ি পটুয়াখালীতে চলে যান এবং নুরুল হুদাকে মিষ্টি ও ফুল উপহার দিয়ে অভিনন্দন জানান।
অনেক সংবাদপত্রে তখন সিইসি-মনোনীত নূরুল হুদার আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের কাছ থেকে পুষ্প স্তবক গ্রহণ করা এবং তাদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করার ছবি প্রকাশ হয়।
ইসিকে কাজ দিয়ে আস্থা অর্জন করতে হবে
নূরুল হুদা একজন সক্রিয় আওয়ামী লীগার ছিলেন এবং দলের পক্ষ থেকে তাকে পটুয়াখালী জেলার নির্বাচনী কমিটির দায়িত্ব দেয়া হয়।
শপথ গ্রহণের পর নির্বাচন কমিশনের সচিবালয়ের প্রেস ব্রিফিংয়ে এ ব্যাপারে তার বক্তব্য চাওয়া হলে জবাবে হুদা বলেন, শপথ গ্রহণের মুহূর্ত থেকে তার সাথে আর কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক নেই।
তিনি বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের আস্থা অর্জন করতে পারবেন বলে দৃঢ়সংকল্প প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ” শুধু বিএনপি নয়, আমরা বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের আস্থা অর্জন করার মতো কাজ করতে পারব। আমাদের আস্থা আছে যে আমরা [ইসিতে] আস্থার আবহ তৈরি করতে সক্ষম হবো। ”
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের পর কুমিল্লা সিটি নির্বাচন এবং শেষ তিনটি উপজেলা নির্বাচন হয়েছে। এসব নির্বাচনে আগের রাতে ব্যালটে শিল মারাসহ অনেক অনিয়ম এবং প্রতারণামূলক কার্যক্রম ঘটেছে।
বিশেষজ্ঞরা কি বলেন?
মোহাম্মদ সহুল হুসেন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার
নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন জনগণের আস্থা অর্জনে যে সংকটের সম্মুখীন সে বিষয়টি অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা যখন নিযুক্ত হন তখন প্রধান বিরোধি রাজনৈতিক দলটি কিছু অভিযোগ করে। তাই আগামী সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করার আগে এই কমিশনকে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। সাধারণ নির্বাচনের আগে কিছু স্থানীয় সরকার নির্বাচন সংগঠিত করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই নির্বাচনে জনগণের আস্থা লাভের জন্য কমিশনকে কিছু ‘দৃশ্যমান কাজ’ করতে হবে। নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত যে পদক্ষেপগুলি নিয়েছে তা ভাল। এ পর্যন্ত সব ঠিক আছে বলে মনে হয়।
বদিউল আলম মজুমদার, সেক্রেটারি সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক)
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন স্বচ্ছ নয়। নতুন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের বিষয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যদিও নতুন নির্বাচন কমিশনাররা অফিসে দায়িত্ব গ্রহণের অল্প পরেই বেশিরভাগ কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে তাদের কার্যক্রম নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। এখন নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যে একটি সুস্পষ্ট বিভক্তি তৈরি করেছে। তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের বক্তব্যের প্রতিপাদ্য তুলে ধরে বর্তমান সিইসিও একতরফা সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করেছেন। এটি আইন থেকে বিচ্যুতি। যে কোন সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে নেওয়া উচিত। নির্বাচন কমিশন একটি যৌথ বা মিলিত সত্তা। এই পরিস্থিতি বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে এবং আমাদের উদ্বিগ্ন করছে।
সূত্র: সাউথ এশিয়ান মনিটর
Discussion about this post