এজবাস্টনে সেমিতে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ গতবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত। কোহলির দল শুধু কঠিন প্রতিপক্ষই নয়, টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিটও। তবে দলটা বাংলাদেশ বলেই বাজি ধরার সাহস পাচ্ছে অনেকেই। বিশ্বমিডিয়া ও ক্রিকেট বিশ্লেষকরাও অনুসন্ধান করেছেন লাল-সবুজ বাহিনী কিভাবে কোথায় পাল্টে দেয়ার ক্ষমতা রাখে ম্যাচের গতিপথ। সেসব বিশ্লেষণ থেকে ভারতকে হারাতে নিয়ামক হতে পারে এমন পাঁচটি কারণ তুলে ধরা হল-
তামিম ইকবালের জ্বলে ওঠা
বাংলাদেশ দলের ব্যাটিংয়ে ভালো শুরু কিংবা বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ম্যাচ জেতার প্রধান শর্তই তামিম ইকবালের জ্বলে ওঠা। টাইগার ওপেনারও আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৮ রানের ঝকঝকে ইনিংস দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু, পরের ম্যাচেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়াকু ৯৫ রানের ধৈর্যশীল ইনিংস। কিউইদের বিপক্ষে যদিও শূন্যহাতে ফিরেছেন, তবে সেমিতে প্রিয় প্রতিপক্ষ ভারতের বিপক্ষে এই বাঁহাতি আরেকবার জ্বলে উঠলেই হিসাব সহজ হয়ে যেতে পারে বাংলাদেশের জন্য। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে তামিমের সেই মারকাটারি ইনিংস নিশ্চয় ভারতীয়দের ভোলার নয়।
চাপ সামলে সত্যিকারের বাঘ হয়ে ওঠা
চাপের মুখে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ার দিন যে ক্রমে শেষ হয়ে আসছে তার প্রমাণ রেখেছেন সাকিব আল হাসান এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এই ব্যাটসম্যান দ্বয়ের ২২৪ রানের রেকর্ড জুটি বাংলাদেশের পালে সাহসের বাতাস যোগাচ্ছে। সুইং ও গতিতে ভরপুর ভারতীয় পেসারদের বিপক্ষে লাল-সবুজদের জন্য দারুণ এক অনুপ্রেরণা এই জুটির মহাকাব্য। যেটা পুরো দলের যেকোন পরিস্থিতি ঘুরে দাঁড়ানোর মানসিকতাই সামনে নিয়ে আসে। এই অদম্য মাসিকতাই এগিয়ে রাখবে টাইগারদের।
নিজেদের দিনে যেকোন প্রতিপক্ষকে হারানোর অভ্যাস
নিজেদের দিনে বাংলাদেশ যেকোন প্রতিপক্ষের জন্যই ভয়ঙ্কর, হারিয়ে দিতে সক্ষম। ভারতীয়দেরও সেটা ভালোই জানার কথা। ২০০৭ সালে তখনকার তরুণ তামিম-সাকিব-মুশফিকদের নিয়ে গড়া লাল-সবুজের দলটাই ছিটকে দিয়েছিল টেন্ডুলকার-গাঙ্গুলি-দ্রাবিড়দের ভারতকে। দলটা এখন আরো পরিপক্ব, সাকিব-মাশরাফিরাও অভিজ্ঞ। তারা দিনটি নিজেদের করে নিতে ভারতের ওপর জেঁকে বসলেই মিলবে কোহলিদের হারানোর সূত্র।
আসরের ডার্ক হর্স তকমা
আসরের ফেভারিট ভারত। বর্তমান চ্যাম্পিয়নও। তাই সেমির লড়াইয়ে মূল চাপটা থাকবে দলটির ওপরই। অন্যদিকে ডার্ক হর্স তকমা গায়ে খেলতে আসা বাংলাদেশের জন্য শেষ চারের ম্যাচটা শুধুই উপভোগের। উপভোগ করার সঙ্গে যদি নিজেদের সেরাটা দিতে পারেন টাইগাররা, তবে ভারতের জন্য অশনি সংকেত। অতীতে উপভোগের মন্ত্র জপে মাঠে অনেকবারই এগিয়ে থেকেছে লাল-সবুজরা।
অনিয়মিত বোলারদের জ্বলে ওঠা
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের ৪৩ ওভারে মোসাদ্দেক হোসেনকে ব্যবহার করেছিলেন মাশরাফি। আর ৩ ওভার বল করে ১৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে কিউই ম্যাচের মোড়ই ঘুরে দিয়েছিলেন এই টাইগার অলরাউন্ডার। ভারতের বিপক্ষে আবারও আগের ম্যাচের পুনারবৃত্তি করতে পারেন মোসাদ্দেক বা অন্য কেউ। মোস্তাফিজ-তাসকিনদের পশাপাশি বাড়তি পাওনা হিসেবে টাইগারদের শক্তি বাড়ানো এমন অনিয়মিত বোলাররা যেকোন মুহূর্তে বদলে দিতে পারেন ম্যাচের রং। দলে ভারসাম্য আনতে এমন বাড়তি শক্তি যোগানো খেলোয়াড়দের ম্যাজিক্যাল মুহূর্ত বাংলাদেশকে এগিয়েই রাখবে।
সূত্র: চ্যানেল আই অনলাইন
Discussion about this post