অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
সুলতানা কামাল এদেশে একজন পরিচিত মুখ। মানুষ তাকে একজন মানবাধিকারকর্মী হিসেবে জানে। তিনি সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একজন উপদেষ্টা ছিলেন। তার আরেকটি পরিচয় হল তিনি কবি সুফিয়া কামালের মেয়ে। সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপিত গ্রিক দেবীর মূতির পক্ষে অবস্থান নেয়ার পর তিনি নতুন করে আলোচনায় এসেছেন। সুলতানা কামাল যে বংশগতভাবেই ইসলাম বিদ্বেষী এটা হয়তো অনেকেরই জানা নেই।
বেগম রোকেয়ার পর কবি সুফিয়া কামালকে নারী জাগরণের কবি বলা হয়। তবে আমরা জানি সুফিয়া কামাল মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও তিনি ছিলেন চরম ইসলাম বিদ্বেষী একজন নারী। তার লেখনি, বক্তৃতা, বিবৃতি, কবিতা ও সাহিত্যের মাধ্যমে তিনি মুসলিম নারী সমাজকে ইসলামের গন্ডি থেকে বের করে আনার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে গেছেন।
১৯৯৯ সালের নভেম্বর মাসে মৃত্যুর আগে কবি সুফিয়া কামাল ভয়েস অব আমেরিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, একজন নারী যখন বোরকা পরে রাস্তায় বের হয়, তখন একজন পুরুষ তাকে আক্রমণ করতে আসলেও সে প্রতিরোধ করতে পারে না। আর একজন নারী যখন বোরকা ছাড়া রাস্তায় বের হবে, তখন কেউ আক্রমণ করতে আসলেও সে প্রতিরোধ করতে পারবে। সুফিয়া কামালের মৃত্যুর পর আরও একাধিকবার তার মৃত্যুবার্ষিকীতে ভয়েস অব আমেরিকা এই সাক্ষাৎকারটি পুনঃপ্রচার করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুসলিম পরিবারের সন্তান হলেও সুফিয়া কামালের মেয়ে সুলতানা কামাল তার জীবনে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেছেন হিন্দুদের মন্দিরে। লীলা নাগের নারীশিক্ষা মন্দিরে ভর্তি হয়ে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। পরবর্তীতে তিনি ঢাকার আজিমপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। পরে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
জানা গেছে, লীলা নাগের ওই মন্দির থেকেই তিনি হিন্দুদের আদর্শ, আচার-আচরণ, সংস্কৃতি, জীবন-যাপনসহ সব কিছু লব্ধ করে আসেন। মুসলিম পরিবারের সন্তান হলেও ইসলামি শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্মীয় হুকুম-আহকামের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক ছিল না। তিনি হিন্দু ধর্মই চর্চা করতেন। এর ফলে, শিক্ষা জীবন শেষে তিনি স্বেচ্ছায় সিলেটের শ্রী সুপ্রিয় চক্রবর্তী নামে এক হিন্দুকে বিয়ে করেন। এরপর থেকে তার নামের সঙ্গে যুক্ত হয় সুলতানা কামাল চক্রবর্তী। এছাড়া তার মেয়েকেও বিয়ে দিয়েছেন একজন খ্রিস্টানের সাথে।
এদিকে, সুলতানা কামাল একজন মানবাধিকারকর্মী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করলেও মানুষের মৌলিক মানবাধিকার রক্ষায় তার ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে দেখা যাচ্ছে তিনি হিন্দু আর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অধিকার রক্ষায়ই বেশি সোচ্চার ভুমিকা পালন করে থাকেন। বিরোধী দলের মানবাধিকার নিয়ে তিনি সব সময়ই নিরব ভুমিকা পালন করে আসছেন।
বর্তমান সরকারের বিগত সাড়ে ৮ বছরে বিএনপি-জামায়াতের শত শত নেতাকর্মী গুম-খুনের শিকার হয়েছে। র্যাব-পুলিশ তাদেরকে দিনের বেলায় আটক করে রাতে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করেছে। পরের দিন বলা হতো বন্দুক যুদ্ধে মারা গেছে। বিশেষ করে বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, সালাহ উদ্দিন আহমদ, হুম্মাম কাদের চৌধুরী, জামায়াত নেতাদের ছেলে সাবেক সেনা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আমান আযমী ও ব্যারিস্টার মীর কাসেম বিন আরমান গুম হওয়ার পরও সুলতানা কামালরা এনিয়ে কোনো কথা বলেননি। এসব কারণে সাধারণ মানুষ মনে করে, সুলতানা কামাল এদেশের মানুষের অধিকার রক্ষায় নয়, আওয়ামী লীগ ও হিন্দুদের অধিকার রক্ষায় তিনি কাজ করছেন।
এমনকি পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়েও রয়েছে তার প্রশ্নবিদ্ধ ভুমিকা। সম্প্রতি তার সাঙ্গপাঙ্গসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম সফরে গেলে উত্তেজিত জনতা কর্তৃক তাদের গাড়ি লক্ষ্য করে জুতা নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটেছে।
বিশিষ্টজনেরা বলছেন, সুলতানা কামাল স্বামী হল হিন্দু, মেয়ের জামাই খ্রিস্টান, তিনি প্রাথমিক শিক্ষাও গ্রহণ করেছেন মন্দিরে, তিনি হিন্দুদের মূর্তির পক্ষে সাফাই গাইবেন এটাই স্বাভাবিক। ইসলাম ও মুসলমানদের পক্ষে তার কাছ থেকে কোনো বক্তব্য আশা করাও ঠিক না।
Discussion about this post