অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলের মধ্যে একজন অতিকথক ও চমকপ্রিয় নেতা হিসেবে পরিচিত। কথিত আছে শেখ রেহানাকে দিয়ে লবিং করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদটি দখলের পরই দলের ভেতর বড় ধরণের বিভক্তি সৃষ্টি করে রেখেছেন। দলের সিনিয়র ও প্রবীন নেতাদেরকে কোনো পাত্তাই দিচ্ছেন না ওবায়দুল কাদের। ছাত্রলীগ থেকে আসা নীবনদেরকেই শুধু কাছে টানছেন। আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, দলটির প্রবীন নেতারা এখন ওবায়দুল কাদেরের ওপর প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। সিনিয়র হিসেবে যতটুকু মূল্যায়ন পাওয়ার কথা ছিল ওবায়দুল কাদেরের কাছ থেকে তারা তা পাচ্ছেন না।
অপরদিকে, ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর থেকেই দলের নেতাকর্মীদেরকে মারামারি, খুনোখুনি, টেন্ডারবাজি ছেড়ে ভাল হওয়ার জন্য উপদেশ দিয়ে যাচ্ছেন। ভাল না হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি-ধামকিও দিচ্ছেন। একই ভাবে হুমকি দিচ্ছেন ছাত্রলীগকেও। কিন্তু তার হুমকি-ধামকিকে নেতাকর্মীরা পাত্তাই দিচ্ছে না। বরং দিন যত যাচ্ছে দলের অভ্যন্তরে খুন-খারাবি ততই বাড়ছে। এমনকি আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণেই কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আঞ্জুন সুলতানা সীমা বিএনপির প্রার্থীর কাছে হেরেছে।
এরপর দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটাতে ব্যর্থ হয়ে ওবায়দুল কাদের নতুন থিউরি আবিষ্কার করলেন যে দলের ভেতর ‘কাউয়া’ ঢুকেছে। কাদেরের এই কাউয়া থিউরি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন মহলে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। এনিয়ে দলের নেতাকর্মীরাও বিব্রতবোধ করছেন। এসব বক্তব্য দিয়ে ওবায়দুল কাদের দলের ভেতর আবার নতুন করে বিভক্তি সৃষ্টি করছেন বলেও নেতাকর্মীরা অভিযোগ করছেন। এমনকি গত ১ এপ্রিল যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী চট্টগ্রামে এক সভায় প্রকাশ্যেই বলেছেন যে, কাউয়া ঢুকেছে বলে দলের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করবেন না।
কাউয়া নিয়ে সমালোচনার মধ্যেই আবার আরেক থিউরি আবিষ্কার করলেন যে দলের মধ্যে ‘ফার্মের মুরগি’ ঢুকেছে। গত ১১ এপ্রিল মুজিবনগরে এক সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমি সিলেটে কাউয়া বলেছি। এখানে কাউয়া বলবো না। এখানে বলবো আওয়ামী লীগে ফার্মের মুরগি ঢুকেছে। কাদেরের এই কাউয়া-মুরগি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে চায়ের স্টল পর্যন্ত বইছে সমালোচনার ঝড়।
আওয়ামী লীগের একটি সূত্রে জানা গেছে, দলের সাধারণ সম্পাদকের এসব মন্তব্যে খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এখন ক্ষুব্ধ। ওবায়দুল কাদেরের এসব বক্তব্যে দলের মধ্যে বিভক্তি বাড়ছে বলেও কয়েকজন নেতা শেখ হাসিনার কাছে অভিযোগ করেছে। প্রধানমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে এনিয়ে সতর্কও করে দিয়েছেন।
জানা গেছে, এরপরই ১৯ এপ্রিল দলের সভাপতি মণ্ডলীর বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, মাফ চাই, প্লিজ কাউয়া-মুরগি আর লিখবেন না। এসব নিয়ে আর না লিখতেও তিনি সাংবাদিকদের অনুরোধ করেছেন।
Discussion about this post