বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ নেই মর্মে সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্য ও কয়েকটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত এসংক্রান্ত রিপোর্টকে প্রত্যাখ্যান করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন।
জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের পক্ষে প্রধান মুখপাত্র রাভিনা শ্যামদেশেনি বলেন, “এমন ভুল তথ্য দুঃখজনক। মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরকালে সরকার, সুশীল সমাজ এবং অনন্যা প্রতিনিধিদের সঙ্গে তার বৈঠকে বাংলাদেশে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে উদ্বেগের কথা বিশদভাবে তুলে ধরেছেন। সফর শেষে এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়া হয়েছে।”
মানবাধিকার নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগের জায়গায় বাংলাদেশ নেই-এ বিষয়টি উল্লেখ করে সরকার নিয়ন্ত্রিত বেশ কিছু গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশের সরকারের স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রী সংবাদ মাধ্যমকে এমন কথা জানান।
এ বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের অবস্থান জানতে চাইলে সংস্থাটির পক্ষে অবস্থান তুলে ধরেন প্রধান মুখপাত্র রাভিনা শ্যামদেশেনি।
গত ২৫ আগস্ট জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশেলেট বিশ্ব পরিস্থিতির উপর সংবাদ সম্মলেনে দেয়া বক্তব্য কোনো বৈশ্বিক রিপোর্ট নয় উল্লেখ করে মুখপাত্র জানান, “দেশগুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ মূলক এটি কোনো বৈশ্বিক রিপোর্ট ছিলোনা।”
মুখপাত্র রাভিনা বলেন, “বাংলাদেশের মানবাধিকার ইস্যুগুলো নিয়ে ইতিমধ্যেই ব্যাপক আলোচনা করেছেন হাইকমিশনার। ২৫ আগস্ট তিনি জেনেভায় যে বিবৃতি দিয়েছেন তাতে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন। সেখানে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ এসেছে। আর ঐদিন ছিলো রোহিঙ্গা গণহত্যার পঞ্চম বার্ষিকী।”
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান মিশেল ব্যাশেলেট বাংলাদেশ সফর শেষে গত ১৭ আগস্ট গুম, বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ড ও পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত করতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার না করে সরকারকে আমলে নিতে বলেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশেলেট। তিনি বাংলাদেশে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগের বিষয়গুলো নিয়ে সরকারের কাছে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত সংস্থা গঠনের তাগিদ দিয়েছেন জাতিসংঘের এই শীর্ষ কূটনীতিক।
সূত্র: জাস্ট নিউজ
Discussion about this post