অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
দুই বছর আগে অ্যানালাইসিস বিডির একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল যে নির্মাণাধীন বাংলাদেশের বৃহত্তর সেতু পদ্মা সেতু শেখ হাসিনা উদ্বোধন করতে পারবেন না। সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার আগেই শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হবে। অ্যানালাইসিস বিডির সেই প্রতিবেদনটির সত্যতা ধীরে ধীরে প্রমাণিত হতে যাচ্ছে। এই সেতু যে শেখ হাসিনা উদ্বোধন করতে পারবেন না ইদানিং সেই আলামত দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে হঠাৎ করেই শুক্রবার সকালে নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন। তিনি সেতুর এপার থেকে ওপার পর্যন্ত পরিদর্শন করেছেন। এমনকি শেখ হাসিনা তার বোনকে নিয়ে সেতুতে ২ কিলোমিটার পায়ে হেটেছেন। তারপর ওপারে গিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থান করেন এবং সেখানেই সকালের নাস্তা করেছেন। বলা যায়-ব্যস্ত প্রধানমন্ত্রী আজ পদ্মা সেতুতে অনেক সময় কাটিয়েছেন। কিন্তু তার সঙ্গে দলের কোনো সিনিয়র নেতা ছিলেন না।
শেখ হাসিনার পদ্মা সেতু পরিদর্শনের খবর সব গণমাধ্যমই ফলাও করে প্রচার করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও হাসিনার পদ্মা পরিদর্শনের ছবি পোস্ট করছেন। গণমাধ্যমগুলো একেকটা একেক ধরণের রং ঢং মাখিয়ে শিরোনাম করেছেন।
এদিকে শেখ হাসিনার এই হঠাৎ পদ্মা সেতু পরিদর্শন নিয়ে বিভিন্ন রকমের গুঞ্জন-কানাঘুষাও শুরু হয়েছে। অনেকেই বলছেন-শেখ হাসিনা এখন সব কিছুই তার গণভবন থেকে করছেন। নিরাপত্তার কারণে তিনি খুব বেশি একটা বাইরে যান না। কিন্তু হঠাৎ করে সাত সকালে কাউকে না জানিয়ে বোনকে নিয়ে পদ্মার পাড়ে গেলেন কেন? হঠাৎ করে তার পদ্মা সেতু পরিদর্শনের প্রয়োজন হল কেন? তারপর তিনি পদ্মা সেতুতে ২ কিলোমিটার পায়ে হেটেছেন। হঠাৎ করে পদ্মা সেতুর প্রতি তার এত আবেগ সৃস্টি হল কেন? আগামী বছর তিনি এই সেতু উদ্বোধন করবেন। এটা কি শুধুই পরিদর্শন নাকি অন্য কোনো কারণ আছে?
খোজ নিয়ে জানা গেছে, র্যাব ও সংস্থাটির ৬ কর্মকর্তা ও পুলিশের আইজিপির উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর শেখ হাসিনা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। সাবেক সেনা প্রধান আজিজের মার্কিন ভিসাও বাতিল করা হয়েছে। যার কারণে তিনি আমেরিকায় যেতে না পেরে এখন দুবাইতে অবস্থান করছেন। এরপর-যুক্তরাষ্ট্র সামরিক অনুদানের হিসাব-নিকাশও চেয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে-সেনাবাহিনীর উপরও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে।
শেখ হাসিনা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছেন যে, এসব নিষেধাজ্ঞায় যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করছে ভারত। তাদের টার্গেট হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়া। এদিকে দেশের অভ্যন্তরেও দীর্ঘদিন কোনঠাসা হয়ে থাকা বিরোধীদলগুলো বিভিন্ন ইস্যুতে মাঠে নামতে শুরু করেছে। দেশে যেকোনো সময় একটা খারাপ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। শেখ হাসিনা এটাও বুঝতে পারছে যে, দেশে কোনো খারাপ পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেই সেনাবাহিনী ক্ষমতা নিয়ে যাবে। সব মিলিয়ে শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থাকার মেয়াদ খুবই সীমিত হয়ে আসছে। এসব চিন্তা থেকেই শেখ হাসিনা তার বোন রেহানাকে নিয়ে স্বপ্নের পদ্মা সেতু পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। কারণ, ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে পারবেন কিনা এ নিয়ে শেখ হাসিনা এখন নিজেই শংসয়ের মধ্যে আছেন।
রাজনীতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন-এটাই হতে পারে শেখ হাসিনার শেষ পদ্মা সেতৃ পরিদর্শন। শেখ হাসিনার পক্ষে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করা সম্ভব হবে না। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র আর ভারত তাকে যেভাবে চেপে ধরছে-তাতে মনে হয় যেকোনো সময় শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে।
Discussion about this post