অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশে কিছু দিন ধরে ধর্ষণ-গণধর্ষণের ঘটনা থামছেইনা। অধিকাংশ ধর্ষণের ঘটনাগুলোই ঘটছে ঘরে ঢুকে জোরপূর্বকভাবে। শুধু সোমবার বগুড়ায়, সিলেট, লহ্মীপুর, গোপালগঞ্জ, পিরোজপুর, সাভার, মাদারীপুরসহ আরও একাধিক জায়গায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার পিছনে রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের অথবা তাদের অঙ্গ সংগঠনের সম্পৃক্ততা।
সিলেটে এক শ্রমিকলীগ নেতা ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে গৃহবধূতে ধর্ষণ করেছে। লহ্মীপুরেও ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে গৃহবধূকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। গোপালগঞ্জে এক তরুণীকে ধর্ষণের পর ভিডিও ধারণ করেছে।
এক কথায় বলতে গেলে, নারী শাসকের দেশে এখন নারীদের মতো এত অসহায় প্রাণী মনে হয় দেশে আর একটিও নেই। নারীরা বাইরে গেলে ধর্ষণ-নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ঘরে ভেতরও ইজ্জত রক্ষা করতে পারছে না। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করছে।
কিন্তু আশ্চর্য্যরে বিষয় হলো-সারাদেশে নারীরা যখন ক্ষমতাসীনদের হাতে ধর্ষণ-নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, তখন এদেশের কথিত নারীবাদী সংগঠনগুলো মুখে কুলুপ দিয়ে চুপ করে বসে আছে। নোয়াখালীর ঘটনায় সারাদেশের মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলেও এদেশের কথিত নারী নেত্রীরা রহস্যজনক কারণে চুপ করে আছেন।
তাদের নীরবতা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বমহলেই সমালোচনা চলছে। সুলতানা কামাল চক্রবর্তী, খুশি কবির, মুন্নি শাহা, মাসুদা ভাট্রি, ফারজানা রুপা, মিথিলা ফারজানা, সমি কায়সাররা আজ কোথায়?
লক্ষণীয় বিষয় হলো-এসব কথিত নারীবাদীদের রহস্যজনক ভুমিকা নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সোমবার হাইকোর্ট ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, দেশে এতো এতো নারী সংগঠন, তারা আজ কোথায়?
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে অনেকে বলছেন-দেশের নারীবাদীরাও কি ধর্ষণের শিকার হয়েছে? তারাও কি ধর্ষিতা? না হলে এত কিছুর পরও তারা প্রকাশ্যে আসছে না কেন?
দেখা গেছে, ধর্ষণের সাথে লীগারদের সম্পৃক্ততা থাকলেই নিরব হয়ে যান তারা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা মানিকের কথা মনে আছে? ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ধর্ষণে সেঞ্চুরি পালন করে আলোচিত হয়েছিল মানিক। ধর্ষণে সেঞ্চুরির পর শাস্তির বদলে তখনকার আওয়ামী লীগ সরকার তাকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী দিয়ে পুরস্কৃত করেছিলো।
সেই সিরিয়াল ধর্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা ফুঁসে উঠলেও, আওয়ামী লীগকে নাখোশ করতে খুব বেশি সাহস দেখান নি নারী নেত্রীরা। তখন রাজপথে তাদের সরব উপস্থিতি তেমন দেখা যায় নি। অথচ বছর দুয়েক আগে, প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনের ক্ষেত্রে ঘটেছে ঠিক উল্টো ঘটনা।
২০১৮ সালের শেষ প্রান্তে একটি টকশো’তে ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন এক নারীর প্রশ্নের জবাবে শুধু বলেছিলেন আপনি অসভ্য। এতেই নারীদের ইজ্জত গেল বলে শুরু হয়েছিল হৈ চৈ। তাঁর বিরুদ্ধে সারাদেশে ঠুকে দেয়া হয়েছিল অনেক মামলা। জেলেও যেতে হয়েছে তাঁকে। এমনকি আদালতের মধ্যে তাঁকে জুতা মারার চেষ্টাও করা হয়েছে তখন। ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন এর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনও করেছিলেন নারী নেত্রীরা। যাতে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর, চিকিৎসক নুজহাত চৌধুরী এবং সাংবাদিক মুন্নী সাহাসহ অন্যরা। অথচ, এখন লীগোরদের ধর্ষণ, গণধর্ষণণে সারাদেশ সরব অথচ কথিত চেতনাধারী নারীবাদীদের দেখা মিলছে না।