অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
প্রাণঘাতী করোনাকে ছাপিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে এখন শেখ হাসিনার বিনাভোটের এমপি কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল। ভিসা বাণিজ্যের নামে কুয়েতে মানবপাচার ও অবৈধ অর্থপাচারের দায়ে কুয়েতে আটক এমপি পাপুলকে রিমেন্ডে নিয়েছে দেশটির ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট। শেখ হাসিনার আশকারায় দুর্নীতি করতে করতে দেশ ছাড়িয়ে এখন ভিনদেশে গিয়ে অপকর্মের দায়ে আটক হয়ে রিমান্ড খাটছে।
বাংলাদেশের এমপি মানবপাচার ও অর্থপাচারের দায়ে কুয়েতে আটক হওয়ার খবর এখন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও প্রকাশিত হচ্ছে। এতে করে দেশের সুনাম আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মারাত্মকভাবে নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছেন সকল শ্রেণী পেশার মানুষ।
আর এমপি পাপুলের অতি বেপরোয়া হয়ে উঠার পেছনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের হাত রয়েছে বলেও মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা। কারণ, গত ফেব্রুয়ারিতে কুয়েত সিআইডির বরাত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে মানবপাচার নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল কুয়েতি পত্রিকা আল কাবাস ও আরব টাইমস।
আল কাবাসের খবরে বলা হয়, কুয়েতে মানবপাচার ও ‘ভিসা বাণিজ্যে’ জড়িত থাকার অভিযোগে তিন বাংলাদেশির একটি চক্রের সন্ধান পাওয়ার পর একজনকে গ্রেপ্তার করেছে সেখানকার সিআইডি। বাকি দুজন বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন; তাদের মধ্যে একজন আবার সংসদ সদস্য।
ওই চক্রটি ২০ হাজার জনকে কুয়েতে পাচার করে ৫০ মিলিয়ন কুয়েতি দিনার হাতিয়ে নিয়েছেন বলে ধারণা দেওয়া হয়েছে ওই দুই সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে।
কুয়েতি গণমাধ্যম ওই সাংসদের নাম উল্লেখ না করলেও বাংলাদেশের একটি পত্রিকায় লক্ষ্মীপুরের একজন এমপির নাম এসেছে, যিনি কুয়েতে জনশক্তি রপ্তানি এবং দেশে আর্থিক খাতের ব্যবসায় যুক্ত। তার স্ত্রী নিজেও সংরক্ষিত আসনের একজন এমপি।
আরব টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের ওই সংসদ সদস্য নিয়মিত কুয়েতে আসা-যাওয়া করলেও সেখান ৪৮ ঘণ্টার বেশি থাকেন না। কুয়েতে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা পাঁচ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না।
আল কাবাস থেকে উদ্ধৃত করে আরব টাইমস পরে আরেক প্রতিবেদনে লিখেছে, কুয়েত সরকারের কাজ পেতে কর্মকর্তাদের পাঁচটি বিলাসবহুল গাড়ি ঘুষ হিসেবে দিয়েছেন বাংলাদেশের ওই এমপি। তিনি তার সম্পদের একটি বড় অংশ যুক্তরাষ্ট্রে সরিয়ে নিয়ে এক মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে ব্যবসা শুরু করেছেন।
এমপি পাপুলকে নিয়ে প্রকাশিত এসব প্রতিবেদনের বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ওই সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন বলেছিলেন, এমপির বিরুদ্ধে মানবপাচারের অভিযোগ ফেইক নিউজ। রাজনীতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার যদি তখনই এই দুর্নীতিবাজ এমপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতো তাহলে আজ দেশের সুনাম নষ্ট হয় না। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের লোকেরা পাপুলের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা বখশিস নেয়ার কারণেই তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।