অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
২০১৯ সাল পুরোটাই সরকারের চরম রোষানলের শিকার ছিল দেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক দল বিএনপি। দলটির কারাবন্দী চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিসহ আরো বিভিন্ন ইস্যুতে ঘোষিত কর্মসুচিই সরকার বিএনপিকে পালন করতে দেয়নি। যেখানে বিএনপির সভা-সমাবেশ সেখানেই ছিল সরকারের পেটুয়া বাহিনী। এর সঙ্গে শেখ হাসিনার ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নামের নিজস্ব বাহিনীতো ছিলই। এরপরও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলটির নেতারা লজ্জাহীনভাবে প্রতিনিদই বয়ান করে যাচ্ছেন যে, রাজপথে আন্দোলন করার মুরোদ বিএনপির নেই। মিছিল করার মতো নেতাকর্মী বিএনপির নেই। বিএনপি যদি মাঠে নামে তাহলে সমুচীত জবাব দেয়া হবে।
তবে, নতুন বছরের প্রথম দিনই এক কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে গেলেন ওবায়দুল কাদের। বুধবার ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ওবায়দুল কাদেরকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছেন-আজ অনেক লম্বা লম্বা কথা শুনতে পাই। অনেকেই মিডিয়ায় বড় বড় কথা বলছেন। এসব কথা বলার নৈতিক অধিকার তাদের নেই। আমি ওবায়দুল কাদেরকে বলতে চাই– আসুন, দেখুন মানুষ আপনাদের ভালোবাসে কিনা। অস্ত্র ছেড়ে, নিরাপত্তা ছেড়ে; আসুন– দেখুন মানুষ কী বলে।
গত ৩০ ডিসেম্বরও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও দলটির আইনজীবী ফোরামের আহ্ববায়ক খন্দকার মাহবুব হোসেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাদ দিয়ে রাস্তায় নামতে আওয়ামী লীগের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মির্জা ফখরুলের আজকের চ্যালেঞ্জ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বেশ আলোচনা হচ্ছে। রাজনীতিক বিশ্লেষকরাও ওবায়দুল কাদেরকে করা ফখরুলের চ্যালেঞ্জকে বেশ গুরুত্ব দিয়ে চুলছেড়া বিশ্লেষণ করছেন। যে দলটি বছরের পর বছর ধরে রাস্তায় নামতে পারেনি তারা আজ ক্ষমতাসীনকে রাস্তায় নামার চ্যালেঞ্জ করার বিষয়টি খুব স্বাভাবিক নয়। বিশ্লেষকসহ সচেতন মানুষের মুখে একটিই প্রশ্ন যে, ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক কি ফখরুলের এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করবে? আর অস্ত্র ও পুলিশ ছাড়া রাস্তায় নামার মতো অবস্থা কি আসলে আওয়ামী লীগের আছে?
তবে, বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেও জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। র্যাব-পুলিশ ও বিজিবি মূলত তাদেরকে শেল্টার দিয়ে ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন তাদের পেছন থেকে সরে গেলে রাস্তায় নামাতো দূরের কথা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ঘরের মধ্যেও থাকতে পারবে না। ফখরুলের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার মতো সাহস ওবায়দুল কাদেরের হবে না বলে মনে করছেন তারা।