অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
সব সম্ভবের দেশ বাংলাদেশ। এখানে যে সব কিছুই সম্ভব সেটা আবারও প্রমাণ করলেন সরকারের অনুগত বিচারপতিরা। দেশে উৎপাদিত পাস্তুরিত দুধ নিয়ে বেশ কয়েক মাস ধরেই সমস্যা চলছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক পরীক্ষা করে প্রমাণ করেছেন এসব দুধে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক মাত্রায় ভারী ধাতু, সালফা ড্রাগ ও অ্যান্টিবায়োটিকের অস্তিত্ব আছে। তার এই পরীক্ষাকে যাছাই করার জন্য নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে দিয়েছিলেন আদালত। তারা যাছাই করে দুধে এসব ক্ষতিকর উপাদান পেয়েছে। আদালতে তারা গত সোমবার এনিয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
এরপর আদালত ১৪টি কোম্পানিকে দুধ উৎপাদন করতে নিষেধ করেছেন। এছাড়া উৎপাদিত দুধ বিক্রি বন্ধ করতেও আদেশ দিয়েছেন আদালত। আদালতের এই নিষেধাজ্ঞার পরই তেলেবেগুনে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লন্ডনে বসে তিনি বললেন-কোথা থেকে এক প্রফেসর এসে এসব পরীক্ষা করেছে? ফারুক আহমেদের এই পরীক্ষার সঙ্গে দুধ আমাদানী কারকদের কারসাজি আছে বলেও সন্দেহ প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করার পরই বুধবার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) পুষ্টি ইউনিটের করা পরীক্ষার বরাত দিয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বললেন-এসব পাস্তুরিত ও অপাস্তুরিত তরল দুধ খেলে কোনো ক্ষতি নেই। সম্প্রতি দুধের মধ্যে ভারী ক্ষতিকর ধাতুর অস্তিত্বের যে খবর ছড়িয়েছে, তা সত্য নয়। তাই তরল দুধ খাওয়া নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তাদের এই রিপোর্ট হাইকোর্ট বিবেচনায় নেবেন বলেও তিনি তখন আশা প্রকাশ করেন।
কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের আশা প্রকাশের এক ঘণ্টা পরই চেম্বার আদালত আদেশ দিলেন যে, ১৪টি কোম্পানির দুধে ক্ষতিকর কিছু নেই। এই দুধ উৎপাদন ও বিক্রি চলবে।
আদালতের এই আদেশের পর মানুষ বিস্ময় প্রকাশ করছেন। আগের দিন যেখানে হাইকোর্ট বলেছে দুধে ক্ষতিকর উপাদান রয়েছে। এই দুধ উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। সেখানে একদিন পরই এসব দুধ কি করে খাটি হয়ে গেল?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষোভকে প্রশমন করতেই চেম্বার আদালত এই আদেশ দিয়েছেন। চেম্বার বিচারপতিরা দুধ কোনো পরীক্ষা করেননি। শুধু সরকারকে খুশী রাখতেই তারা এই আদেশ দিয়েছেন। পদ ধরে রাখার জন্য এই মুহূর্তে জাতির বৃহত্তর স্বার্থের চেয়ে সরকারের স্বার্থ রক্ষা করাই এখন তাদের মূল কাজ। সেটাই তারা করেছেন।