অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ শেষ করতে পদ্মা নদীতে রক্ত ও শিশুদের মাথা লাগবে বলে ফেসবুকে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ার পরই অ্যানালাইসিস বিডির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল যে, সরাকারি গোয়েন্দা বাহিনী, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে এসব করছে।
দেশের সার্বিক পরিস্থিতি এখন যেকোনো সময়ের চেয়ে শান্ত। দেশে কোনো আন্দোলন নেই। সরকার একের পর এক অপকর্ম করে চললেও এসব নিয়ে বিরোধী দল মাঠে নামছে না। যার কারণে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার করার কোনো ইস্যু আপাতত সরকারের হাতে নেই। তাই সরকার বিভিন্ন এজেন্সি ও দলের লোকদের দিয়ে ছেলেধরার কথিত গুজব ছড়িয়ে এগুলোর দায়ভার বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে।
গত সোমবারে নেত্রকোনায় একটি সভায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন-ছেলেধরা গুজব বিএনপি-জামায়াতের নিখুঁত পরিকল্পনা কৌশল। দেশকে অস্থিতিশীল করতে তারা এসব করছে। আর বৃহস্পতিবার তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ বলেছেন-ছেলেধরা গুজব ছড়ানোর অভিযোগে যারা গ্রেফতার হয়েছে তাদের ৭০ শতাংশই বিএনপি-জামায়াতের লোক। আনিসুল হক ও হাসান মাহমুদের দাবির কোনো বাস্তবতা নেই। তাদের দাবি একেবারেই অসার, ভিত্তিহীন ও ভুয়া। তারা শুধু মিথ্যাচারই করে যাচ্ছেন। আজ পর্যন্ত একটি প্রমাণ করতে পারেন নি।
পুলিশের আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী ১০৭ জন গ্রেফতারের কথা জানালেও তারা যে বিএনপি-জামায়াতের লোক সেটা কিন্তু বলেন নি। দেশের যেসব গণমাধ্যম সারাদিন বিএনিপ-জামায়াতের পেছনে লেগে থাকে সরকারের সেসব দালাল গণমাধ্যমও আজ পর্যন্ত কোনো তথ্য প্রকাশ করতে পারেনি যে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা ছেলেধরা গুজবের সঙ্গে জড়িত।
অথচ দেশবাসী বিপরীত চিত্র দেখেছে। পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা লাগবে বলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ঝালকাঠিতে এক যুবলীগ নেতা গ্রেফতার হয়েছে।
জানা গেছে, ফেসবুকে ছেলে ধরার গুজব ছড়ানোর অভিযোগে ঝালকাঠিতে রিয়াজুল মোর্শেদ তালুকদার রিয়াজের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রিয়াজ শহরের কালীবাড়ি সড়কের ধোপারচক এলাকার অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান তালুকদারের ছেলে। তিনি জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। বুধবার সন্ধ্যায় শহরতলীর গাবখান সেতু এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।
ঝালকাঠি থানার ওসি শোনিত কুমার গায়েন জানান, রিয়াজ তার ফেসবুক আইডিতে ছেলেধরা গুজব ছড়িয়ে শান্তিশৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা করে। এ ঘটনায় পুলিশ তাকে বুধবার সন্ধ্যায় গাবখান সেতু এলাকা থেকে আটক করে।
তিনি জানান, রাতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রিয়াজকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫(২) ও ৩১(২) ধারায় একটি মামলা দায়ের করে এসআই আনোয়ার হোসেন খান। এ মামলায় যুবলীগ নেতা রিয়াজকে গ্রেফতার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়।রিয়াজের মোবাইল ফোন সিমসহ জব্দ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
আনিসুল হক আর হাসান মাহমুদরা বিএনপি-জামায়াতের ওপর ছেলেধরার গুজবের দায় চাপানোর চেষ্টা করলেও যুবলীগ নেতা রিয়াজের গ্রেফতার প্রমাণ করে সারাদেশে কারা এসব গুজব ছড়াচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আ.লীগ নেতারা পরিকল্পিতভাবে গুজব ছড়িয়ে এসবের দায় বিএনপি-জামায়াতের ওপর চাপাচ্ছেন।