অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
সোনাগাজী মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত রাফিকে পুড়িয়ে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়া সেই ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের মতো বরগুনায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা রিফাতের মূল খুনী নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীকে নিয়েও নাটক শুরু করেছে পুলিশ প্রশাসন ও সরকার।
ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে গেলেও দুই খুনীকে এখনো গ্রেফতার করছে না পুলিশ। বরং এনিয়ে সরকারের একেক মন্ত্রী একেক রকমের বক্তব্য দিচ্ছেন।
তবে একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, রিফাতের খুনী নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী বর্তমানে পুলিশ হেফাজতেই আছে। কিন্তু প্রশাসন তাদেরকে গ্রেফতারের বিষয়টি লুকিয়ে রেখেছে। যেমনভাবে সোনাগাজী থানার ওসি মোয়াজ্জেমকে আটকের পর লুকিয়ে রেখেছিল।
একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, খুনী নয়ন এবং ফরাজীকে ঘটনার দিন দিবাগত রাতেই আটক করেছে পুলিশ। সরকারের সিদ্ধান্তহীনতার কারণেই পুলিশ তাদেরকে এখনো গ্রেফতারের বিষয়টি স্বীকার করছে না।
জানা গেছে, নয়নের এমনভাবে বেপরোয়া হয়ে বেড়ে উঠার পেছনে ক্ষমতাসীনদের দলের নেতাদের হাত রয়েছে। তারা নয়নকে বাঁচানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। নয়ন গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নিলে স্থানীয় অনেক রাঘব বোয়ালদের নাম ও বেরিয়ে আসতে পারে।
আর পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে, নয়ন এবং ফরাজীকে নিয়ে সরকার ৩ বিষয় চিন্তা করছে।
প্রথমত: নয়ন একজন মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। এরসঙ্গে স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তাও জড়িত আছেন। তাদের প্রশ্রয়েই নয়ন দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব করে আসছে। এখন নয়নকে রিমান্ডে নিলে তাদের নামও বেরিয়ে আসতে পারে। সেজন্য তারা চাচ্ছে নয়নকে অন্য কাউকে গ্রেফতারের অভিযানে বের হয়ে বন্দুক যুদ্ধের নামে ক্রস ফায়ার দিতে। যাতে পেছনের নাটেরগুরুদের নাম আর কখনো প্রকাশিত না হয়।
দ্বিতীয়ত: আরেকটি পক্ষ চাচ্ছে নয়ন ও রিফাত ফরাজীকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেবে। সে আর কখনো দেশে আসবে না। তখন বলা হবে যে, তাদেরকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সম্ভবত তারা দেশ থেকে পালিয়ে গেছে।
তৃতীয়ত: আর নয়নকে আশ্রয়দাতা হিসেবে পরিচিত ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বিপক্ষের গ্রুপটি চাপ দিচ্ছে নয়নকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। এতদিন ধরে যারা তাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে আসছে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনতে হবে।
একটি সূত্রে জানা গেছে, যদি নয়নকে ক্রস ফায়ার না দিয়ে ও না পাঠিয়ে জনম্মুখে হাজির করা হয় তাহেল বরগুনার বাইরে অন্য কোনো স্থানে নিয়ে হঠাৎ করে নাটকীয় ভাবে গ্রেফতার হতে পারে। তবে সূত্রটি বলছে নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীকে খুব শীঘ্রই গ্রেফতার দেখানোর সম্ভাবনাই বেশি।