অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
সম্প্রতি শেখ হাসিনার ফোনালাপ নিয়ে তোলপাড় চলছে সোশ্যাল মিডিয়াসহ সর্বত্র। তোলপাড় চলছে আওয়ামী লীগ- বিএনপি উভয় শিবিরেও। এনিয়ে ক্ষমতাসীনদের ভিতরে সন্দেহ অবিশ্বাস আর বিরোধ চরমে উঠছে। শেখ হাসিনার মুখ দিয়ে বিরোধী জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে এমন মন্তব্য জনমনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। প্রশ্ন উঠেছে তাঁর এই মন্তব্য কোন রাজনৈতিক বক্তব্যে উঠে আসেনি কেন?
বিশ্লেষকরা বলছেন, একজন অধিনস্থ রাজনৈতিক নেতার ফোনে এমন একটি মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ব্যাক্তিগত আলোচনায় এমন মন্তব্যের গুরুত্ব অনেক বেশি। এতে স্পষ্ট হয়ে গেছে, বেগম খালেদা জিয়া সরকারের ইচ্ছায় আটক আছেন। আদালত সরকারের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটায় মাত্র। বিদেশে কোনো হোটেল তাদের বুকিং দিতে চায় না। স্বয়ং সরকার প্রধানের মুখ দিয়ে এমন মন্তব্য বের হয়ে আসা খুবই লজ্জার বিষয়!
কিভাবে কিভাবে ফাঁস হলো ফোনালাপ?
বাংলাদেশর বিভিন্ন মিডিয়ার অনুসন্ধানেও উঠে আসেনি এই প্রশ্নের উত্তর। তাহলে এটা কি বিদেশী কোন গোয়েন্দা সংস্থা করেছে? নাকি যুক্তরাজ্যের কোন গোয়েন্দা সংস্থা ফাঁস করেছে?অনুসন্ধানে দেখা যায়, আওয়ামী শিবিরের অতি কৌতুহল থেকে এমনটা হয়েছে।
শেখ হাসিনার জন্য বুকিং ছিল বেকার ষ্ট্রিটের কারিজাস হোটেল। সে অনুযায়ী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নির্ধারিত সময়ে অভ্যর্থনা জানাতে কারিজাস হোটেলের সামনে সমবেত হয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য বশত হোটেলের বুকিং শেষ মুহূর্তে ক্যান্সেল করে দেয় কতৃপক্ষ। কারন শেখ হাসিনা যেই হোটেলেই উঠেন, সেখানে আশে পাশে যুক্তরাজ্য বিএনপি অবস্থান নিয়ে শ্লোগান দিতে থাকে। উপস্থিত হয় আওয়ামী লীগও। এতে হোটেলের চার পাশের পরিবেশ বিঘ্নিত হয়। যা যুক্তরাজ্যের মানুষের কাছে খুবই দৃষ্টিকটু বটে। সব মিলিয়ে হোটেল কতৃপক্ষ এমন ঝামেলা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, কারিজাস হোটেল বুকিং ক্যান্সেলের পর শেখ হাসিনার জন্য তাজ হোটেলে ব্যবস্থা করা হয়। এখানে মূলত বুকিং নেয়া হয়েছে রাষ্ট্রপতির নামে। একই সময়ে রাষ্ট্রপতিও আসছেন চিকিৎসার জন্য। শেষ বেলায় কাজিরাস হোটেল কতৃপক্ষ বুকিং ক্যান্সেল করায় তাৎক্ষণিক রাষ্ট্রপতি এবং তাঁর স্টাফদের জন্য বুকিং নেয়া হোটেলে উঠেছেন শেখ হাসিনা ও তাঁর সফর সঙ্গীরা। কিন্তু যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতারা এটা জানতে না পেরে অভ্যর্থনা জানাতে সমবেত হন পূর্ব নির্ধারিত কারিজাসের সামনে। তাজ হোটেলে উঠার পর শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি সৈয়দ ফারুকের সাথে কথা বলেন। ফোনে কথা বলার সময় সৈয়দ ফারুক মোবাইল লাউড স্পীকারে রাখেন, যাতে সমবেত সবাই শুনতে পারে। এসময় ফেইসবুক লাইভে ছিলেন দু/একজন। এ বক্তব্য ফেইসবুক লাইভেও তখন ভাসমান হয়। যদিও তাৎক্ষণিক মুছে ফেলার জন্য (ডিলিট) নির্দেশ দেন উপস্থিত নেতৃবৃন্দ। তবে কোন একজনের ফেইসবুক থেকে ডিলিট করতে একটু বিলম্ব হয়েছিল। এর মাঝে এ বক্তব্য সেইভ করে নিয়েছেন কেউ একজন। পরবর্তীতে বক্তব্যের এ অংশটি আবার সোস্যাল মিডিয়ায় আপলোড করা হয়। যা ভাইরাল হয়ে যায়।
সূত্রটি বলছে, এনিয়ে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। যুক্তরাজ্যর ৫ নেতা এখন তোপের মুখে। তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ারও দাবী উঠেছে আওয়ামী লীগের ভেতরে থেকেই।