অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
আসন্ন একাদশ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার লক্ষ্যে সারাদেশে জমা দেয়া মনোনয়নপত্র ছাচাই বাছাই করেছে নির্বাচন কমিশন। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ৩ হাজার ৬৫টি মনোনয়নপত্রের মধ্যে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে ৭৮৬টি মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে ইসি। বাতিল হওয়া এসব মনোনয়নপত্রের মধ্যে ৮০টি হলো জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি জামায়াত নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের প্রার্থীদের।
লক্ষণীয় বিষয় হলো, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের এমন সব প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে যারা বিপুল ভোটে নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ৩টি আসনের মনোনয়নপত্র, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, রেজা কিবরিয়া, গোলাম মাওলা রনি, মীর নাছির, মোর্শেদ খান, গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ বিএনপি, জামায়াত, গণফোরামের বেশ কয়েকজন প্রার্থী রয়েছেন।
এদিকে মনোনয়নপত্র বাতিলের ক্ষেত্রে ইসির কর্মকর্তারা নিয়ম কানুন মানেন নি বলেও গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এমনকি মনোনয়নপত্রের সংযুক্ত করে দেয়া নথিপত্র গায়েব করে বিএনপি প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিলেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে। কুমিল্লা ৩ আসনে বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্রে সঙ্গে যুক্ত করে দেয়া আয়কর রিটার্নের সনদ গায়েব করে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।চট্টগ্রামে সরকারের মন্ত্রী ও জাপা নেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদের ইশারায় মীর নাছির ও তার ছেলের মনোনয়ন বাতিল করার অভিযোগ উঠেছে। দিনাজপুর ও নীলফামারীতে ঠুনকো অজুহাত দেখিয়ে জামায়াতের দুই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিলের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে বিরোধী জোটের গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় এনিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সকল মহলে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।ইতিমধ্যে বিএনপিও অভিযোগ করেছে যে সরকারের মাস্টার প্লানের আলোকেই নির্বাচন কমিশন এসব করছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ সচেতন মানুষও বলছেন, গণহারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের প্রার্থীদের গণহারে মনোনয়ন বাতিল পূর্ব পরিকল্পিত।তফসিল ঘোষণার পর সরকার মনে করছিল দেশের বৃহত্তর এই রাজনৈতিক জোট নির্বাচনে অংশ নেবে না।কিন্তু জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দল নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দেয়ার পরই চরম বেকায়দায় পড়ে যায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গোয়েন্দা রিপোর্টের মাধ্যমে শেখ হাসিনা জানতে পেরেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ নির্বাচনে থাকলে আওয়ামী লীগের পক্ষে আর কোনো ভাবেই ক্ষমতায় আসা সম্ভব হবে না। তাই শুরু থেকেই মামলা, হামলা, খুন, হত্যা, গুম, অপহরণ ও গ্রেফতারের মাধ্যমে সরকার বিরোধী জোটকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করছে। গুরুত্বপূর্ণ ৮০ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলও সরকারের এই কৌশলেরই অংশ।