অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
রাজনৈতিক সংকট নিরসন ও আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিরোধী জোটগুলোর ধারাবাহিক সংলাপ চলছে। তবে, দেশবাসীর চোখ ছিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপের দিকে। যেটা বৃহস্পতিবার রাতে গণভবনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংলাপের দুইদিন আগে অ্যানালাইসিস বিডির পাঠকদেরকে একটি খসড়া সংলাপের মাধ্যমে ধারণা দেয়া হয়েছিল যে মূল সংলাপের ফলাফলটা কি রকম হতে পারে। ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবির মধ্যে সরকার কোনগুলো মানতে পারে সেটা বলার চেষ্টা করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাতে সংলাপ শেষে দেখা গেছে ফলাফল খুব বেশি একটা ব্যবধান হয়নি। মৌলিক যে কয়টা দাবি আছে প্রধানমন্ত্রী একটাও মানেন নি।
সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, ইভিএম ব্যবহার বন্ধ ও নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে মোতায়েনের দাবিগুলো আওয়ামী লীগ মানেনি। বাদবাকী দাবিগুলো কারো কাছেই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়নি। অর্থাৎ দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধী দল ও সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যেসব বিষয়ের দাবি জানিয়ে আসছিল সেগুলোর একটিও সরকার মানেনি।
এদিকে, শুক্রবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর দরজা সব সময় খোলা। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট চাইলে ছোট পরিসরে আবারো সংলাপ হতে পারে।
তবে, রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ সচেতন মানুষ বলছেন, প্রধানমন্ত্রীতো আলোচনার দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন গণভবনের দরজা খোলা রেখে লাভ কি? তিনি সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্দলীয় সরকার গঠন করবেন না, খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেবেন না, বিতর্কিত ইভিএম ব্যবহার বন্ধ করবেন না, ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েন করবেন না। তাহলে শুধু শুধু সংলাপে বসে লাভ কি?
কেউ কেউ বলছেন, প্রধানমন্ত্রী দরজা সবার জন্য খুলে দিয়েছেন। কিন্তু কাউকে প্রবেশ করতে দেবেন না। অর্থাৎ আলোচনা মানি, বিচার মানি, কিন্তু তালগাছ আমারই। শুধু গণভবনের দরজা খুলে দিলে লাভ হবে না, ফলপ্রসূ আলোচনার দরজাও খুলে দিতে হবে। অন্যথায় মনে করা হবে, এটা শুধুই মানুষকে দেখানোর জন্য। সংকট নিরসন উদ্দেশ্য নয়।