অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
নির্বাচনের আগে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদেরকে আবারও হয়রানি করা হবে- এরকম এক আশংকার মধ্যেই আবার নতুন করে মামলা, হয়রানি, দমন পীড়ন ও গুম অভিযান শুরু করেছে সরকার। মানবাধিকার সংস্থা অধিকারও এমন তথ্যই জানিয়েছে।
তারা বলছে, হঠাৎ করেই গুম ও অপহরনের ঘটনা আশংকাজনকভাবে বেড়ে গেছে। অধিকারের তথ্য অনুযায়ী গত সেপ্টেম্বরে ৩০ জন মানুষকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গুম করা হয়েছে। অধিকার আরো বলছে যে, ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধের নামে বিচারবহির্ভুত হত্যাকান্ডও চলছে আগের মতই। সেপ্টেম্বর মাসে বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে ৩৬ জন মানুষ। সব মিলিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারী মাসের ১ তারিখ থেকে এ পর্যন্ত দেশে বিচার বহির্ভুত হত্যার ঘটনা ঘটেছে ৪০৩টি।
বিরোধী দলীয় নেতাকর্মী বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেও মামলা করার হার বেড়েছে। গত মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত ও সেক্রেটারী জেনারেল মোবারক হোসেইনসহ সারা দেশের জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ের কয়েক হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিএনপরি হিসেবে ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ৪ হাজারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে আসামী করা হয়েছে দলটির ৮০ হাজার নেতাকর্মীকে। এর বাইরে আরো ২ লাখ ৩৩ হাজার জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে। যার উপর ভিত্তি করে সরকার দেশব্যাপী নতুন করে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে।
অধিকার বলছে, আগে থেকেই ধারনা করা হয়েছিল যে নির্বাচনের আগে সরকার বেশ বড় করে দমন অভিযান চালাতে পারে আর সেটাই এখন বাস্তবে দেখা যাচ্ছে। আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। যদিও অধিকার বলছে, নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার মত কোন লেভেল প্লেয়িং গ্রাউন্ড এখনো তৈরী করা হয়নি আর সেরকম কোন লক্ষন বা ইচ্ছাও সরকারের তরফ থেকে দেখা যাচ্ছে না।
অধিকার মনে করছে, বর্তমান সরকার আগামী নির্বাচনে নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্য সৃষ্টি করার জন্য মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে হরন করছে। যার অংশ হিসেবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রনয়ন করা হয়েছে। পাশাপাশি সরকার বিরোধী দলগুলোর সমাবেশ ও জমায়েতের উপরও অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সরকারী দল পছন্দসই সময় ও স্থানে সমাবেশ করতে পারলেও বিরোধী দলগুলোর সমাবেশ আয়োজনে নানা বাহানায় পুলিশ প্রশাসন বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।