অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
অনেক টানাপোড়েনের পর অবশেষে জাতীয় ঐক্যের একটি কাঠামো দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন। গত শনিবার মহানগর নাট্যমঞ্চে অনুষ্ঠিত নাগরিক সভা থেকে জাতীয় ঐক্য তার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেছে। আওয়ামী লীগ বিরোধী সকল রাজনৈতিক দলই নবগঠিত এই জাতীয় ঐক্যকে স্বাগত জানিয়েছে। ইতিমধ্যে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ১৯টি দলই জোটে যোগ দিয়েছে। জাতীয় ঐক্যের নাগরিক সমাবেশে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্ঠা ও বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনও যোগ দিয়েছেন। এছাড়া সুশীল সমাজসহ বিশিষ্ট নাগরিকেরাও ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন এই জাতীয় ঐক্যকে সমর্থন দিয়েছেন।
আরেকটি বিষয় লক্ষ্য করা গেছে, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষও সরকার বিরোধী এই জোটকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিচ্ছেন। সাধারণ মানুষের মনোভাব দেখে মনে হচ্ছে, তারা এখন ডাকের অপক্ষোয় আছেন। জাতীয় ঐক্যের পক্ষ থেকে ডাক দিলেই তারা রাস্তায় নেমে পড়বেন।
এদিকে, গত শনিবার জাতীয় ঐক্যের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর থেকেই সরকারের ভেতর চরম অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, আগামীতে ক্ষমতা হারানোর ভয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে মন্ত্রী-এমপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। ড. কামাল যাতে অন্যদের নিয়ে জাতীয় ঐক্য গঠন করতে না পারেন সেজন্য শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ বিভিন্নভাবে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করে আসছিল। জাতীয় ঐক্য গঠন ঠেকাতে না পেরে প্রধানমন্ত্রী এখন ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতাদেরকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ শুরু করেছেন। এমনকি অশালীন ভাষায় শেখ হাসিনা প্রবীণ রাজনীতিবিদদেরকে কটাক্ষ করছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, তারা সরকারকে উৎখাতের জন্য নাকি জাতীয় ঐক্য গঠিত হয়েছে। অথচ তিনিই সেদিন এই জাতীয় ঐক্যকে স্বাগত জানিয়েছিলেন।
এরপর জাতীয় ঐক্য নিয়ে শেখ হাসিনা মুখ খোলার পর তার দলের নেতারাও ড. কামাল হোসেনসহ অন্যদেরকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দিচ্ছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিমের বক্তব্য শুনে মনে হলো এই ঐক্য নিয়ে তারা এখন চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে আছেন।
রাজনীতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জাতীয় ঐক্য সরকারকে ঘূর্ণিঝড়ের মতো আঘাত করেছে। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সরকারের ভেতর কম্পন শুরু হয়ে গেছে। যার কারণে, জাতীয় ঐক্যের নেতাদেরকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী।