অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক আন্দোলনকে এবার সরকার বিরোধী আন্দোলন হিসেবে উল্লেখ করলো পুলিশ। সোমবার ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১২ জন শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার দেখিয়ে তাদের বিরুদ্ধে করা মামলার এজাহারে এমনটিই উল্লেখ করা হয়েছে। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে অংশ নেয়ায় কথিত গুজব ছড়ানোর অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়।
গত ৫ সেপ্টেম্বর ডিবি পরিচয়ে বাসা ও মেস থেকে তুলে নিয়ে ৫ দিন গুম রাখার পর গতকাল সোমবার ১২ শিক্ষার্থীকে আদালতে তোলা হয়। এরপর তাদেরকে গুজবের মামলায় ২ দিন করে রিমান্ড দেয় আদালত। এতদিন ডিবি ও স্থানীয় থানা পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতারের কথা অস্বীকার করে আসছিলো।
এ নিয়ে কয়েক দফা সংবাদ সম্মেলনও করে শিক্ষার্থীদের পরিবার। রোববার দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে ওইসব ছাত্রের অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ে ১২ জন ছাত্রকে ৪ দিন ধরে অন্যায়ভাবে আটক রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে। অথচ তাদের আটক বা গ্রেফতারের বিষয়টি স্বীকার করা হচ্ছে না। এমনকি তাদের আদালতেও সোপর্দ করা হচ্ছে না।
ওইদিনই এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবি পুলিশের উপকমিশনার মশিউর রহমান গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, সংবাদ সম্মেলনে যারা অভিযোগ করেছেন তাদের অভিযোগ সঠিক নয়। ৫ সেপ্টেম্বর বা ৭ সেপ্টেম্বর আমরা কাউকে গ্রেফতার করিনি।
ডিবির পক্ষ থেকে অস্বীকারের পরদিনই ১২ শিক্ষার্থীকে আদালতে তোলা হয়। তাদেরকে ৫ সেপ্টেম্বর তুলে আনা হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় তাদেরকে ৮ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করা হয়েছে। এমনকি মামলার এজাহারে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকে সরকার বিরোধী আন্দোলন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সরকারের মন্ত্রী এমপিরা যেখানে বক্তব্য বিবৃতিতে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন তাদের চোখ খুলে দিয়েছে বলে সাধুবাদ দিচ্ছে সেখানে পুলিশ কর্তৃক এই আন্দোলনকে সরকার বিরোধী আন্দোলন হিসেবে তুলে ধরায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে। তারা বলছেন পুলিশ কি নিজ থেকেই এসব করছে নাকি সরকারের নির্দেশেই এসব করছে? তাহলে বক্তৃতা বিবৃতিতে সরকার যা বলছে ভেতরে তার উল্টোটা? এমন প্রশ্নও রেখেছেন অনেকে।