অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
কথিত দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে আটক বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার হাত-পা ফুলে বাম পাশ প্রায় অবস হয়ে গেছে। তিনি এখন দাঁড়াতে পারছেন না। এমনকি বেশি সময় বসেও থাকতে পারছেন না। এখন প্রতি ঘণ্টায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী আইনজীবীদের মাধ্যমে বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, চিকিৎসা দিয়ে আগে আমাকে বাঁচান, পরে বিচার করুক।
একজন সাবেক রাষ্ট্রপতির স্ত্রী ও সাবেক একজন তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর বেঁচে থাকার এই করুণ আর্তি শুনে মানুষ শুধু উদ্বিগ্নই হয়নি, চরমভাবে ক্ষুব্ধও হয়েছে। বিনা চিকিৎসায় একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী কারাগারে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হওয়ার ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে আর কোথাও আছে কিনা জানা নেই। বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেখ হাসিনার নৌকার গুটি কয়েকজন মাঝি ছাড়া এদেশের সবাই খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত।
কিন্তু এরই মধ্যে আরেক উদ্বেগজনক সংবাদ পাওয়া গেছে। শুক্রবার দিবাগত রাতে হঠাৎ করেই বিপুল সংখ্যক র্যাব-পুলিশ মোতায়েন করা হয় নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায়। ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি তাদের পরিচিত সংবাদকর্মীদেরকে বলেছেন।
এছাড়া শনিবার দিনেও ওই এলাকার কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। রাত আড়াইটার দিকে পুরনো কারাগার এলাকায় মোতায়েন করা অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য তাদের চোখে পড়েছে। গভীর রাত হওয়ায় কেউ আর বেরিয়ে রাস্তায় আসেনি।
কোনো গণমাধ্যমে সংবাদটি প্রকাশ না হলেও এক কান দুই কান করে এটা এখন সবার কানেই চলে গেছে। এনিয়ে এখন জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীরাও এনিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছেন।
সবারই প্রশ্ন-রাতে কি তাহলে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বেশি খারাপ হয়েছিল? হয়তো অবস্থার অবনতি দেখে বিষয়টি কাউকে না জানিয়ে সরকার গোপনে কারাগারে ডাক্তার নিয়ে এসেছিল।
আবার কেউ বলছেন, রাতের পরিস্থিতি দেখে মনে হয়েছে সরকারের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। সেই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিটা কে হতে পারে সেটা সম্পর্কে কিছু বলতে পারছেন না। আবার কেউ মনে করছেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পূর্ণ সরকারের প্রতিকূলে চলে গেছে। ড. কামালের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্য হতে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই ঐক্য গঠন হয়ে গেলে সরকার আর বেশিদিন টিকে থাকতে পারবে না। হয়তো কোনো একটি রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই খালেদা জিয়ার কাছে যেতে পারেন।