অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সবচেয়ে বড় সংঠগন অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন বা ওআইসি’র অন্তর্ভূক্ত রাষ্ট্রগুলোর পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের নিয়ে দুই দিন ব্যাপী সম্মেলন।
সম্মেলনের শুরুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘ বক্তব্য দিয়েছেন। দলীয় জনসভায় যেভাবে শেখ মুজিবের আমল থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত বায়বীয় ও কাল্পনিক উন্নয়নের গল্প শোনান। ঠিক তেমনিভাবে ওআইসির মতো একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার সম্মেলনেও তিনি তার সরকারের উন্নয়নের গল্প শুনিয়েছেন। যেখানে তার বক্তব্যে প্রাধান্য পাওয়ার কথা ছিল বর্তমান মুসলিম বিশ্বের দুর্দশা ও এর থেকে পরিত্রাণের উপায়। কিন্তু, শেখ হাসিনা প্রাধ্যন্য দিয়েছেন তার বাবা ও তার আমলের উন্নয়নের গল্প।
কূটনৈতিক সূত্রে খবর, শেখ হাসিনার একপেশে বক্তব্যে ওআইসির দেশসমূহের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা খুবই বিরক্ত প্রকাশ করেছেন। কারণ, বর্তমান সরকারের আমলে গুম-খুন, অপহরণ, বিনাবিচারে হত্যাসহ মানবাধিকার লংঘনের ঘটনাগুলো তারা ভালভাবেই জানেন।
অন্যদিকে ওআইসি হলো মুসলিম রাষ্ট্র সমূহের একটি সংস্থা। এ সংস্থার সদস্য দেশ সবই মুসলিম রাষ্ট্র। জনসংখ্যার ভিত্তিতে কোনো রাষ্ট্র এ সংস্থার সদস্য হয়নি। কোনো অমুসলিম রাষ্ট্র এ সংস্থার সদস্য না। কিন্তু, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার মুসলিম বিদ্বেষী একটি কট্টর হিন্দু রাষ্ট্র ভারতকে ওআইসির পর্যবেক্ষক করার জন্য সম্মেলনে সংস্থাটির ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। ওআইসির গঠনতন্ত্র সংশোধন করে ভারতকে পর্যবেক্ষক করার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী সম্মেলনে তাগিদ দিয়েছেন।
কূটনৈতিক সূত্রে আরো জানা গেছে, মুসলমানদের ওপর যারা প্রতিনিয়ত নীপিড়ন নির্যাতন চালাচ্ছে সেই ভারতকে ওআইসির পর্যবেক্ষক করতে বাংলাদেশ তাগিদ দেবে এটা ছিল সংস্থাটির নেতাদের কাছে অপ্রত্যাশিত। বাংলাদেশের এ ভূমিকায় ওআইসির নেতৃবৃন্দ প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এমনকি বাংলাদেশ সরকারের উদ্দেশ্য নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছে কয়েকটি দেশ। তারা মনে করছে, ভারতের মুসলমানদের স্বার্থে বাংলাদেশ সরকার এ প্রস্তাব করেনি। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য মূলত বাংলাদেশ সরকার এ প্রস্তাব দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এমন প্রস্তাব দেয়ার পরই গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিরা সহকারী মহাসচিব পদে বাংলাদেশকে ভোট দেয়নি।
এছাড়া পাকিস্তান ও তুরস্কের কারণে বাংলাদেশের প্রার্থী হেরেছে মর্মে সরকারের মুখপাত্র হিসেবে এমন কিছু গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে ক্ষুব্ধ হয়েছে তুরস্ক ও পাকিস্তান। এ থেকে সরকারের সঙ্গে দেশ দুইটির সম্পর্ক খারাপ হতে পারে বলেও মনে করছেন কূটনৈতিকরা।