অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আজ রোববার নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। নির্বাচন কমিশন গৃহীত ৭ দফা কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তবে, সিইসি নুরুল হুদার বক্তব্যের লক্ষণীয় বিষয় হলো বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠান ও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার প্রসঙ্গে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, সরকার, কোনো দল এবং দেশি-বিদেশি সংস্থার প্রভাবমুক্ত থেকে নির্বাচন করতে বর্তমান কমিশন বদ্ধপরিকর। কমিশনের বিশ্বাস আছে প্রভাবমুক্ত থেকেই আমরা নির্বাচন করতে পারবো। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন অবস্থায় বর্তমান ইসির পক্ষে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব। আর আগামী নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতি ব্যবহারের বিষয়টি এখনো বন্ধ হয়ে যায়নি বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে আগামী নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট অংশ নেবে না বলে তারা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে। এমনকি দলীয় সরকারের অধীনে আওয়ামী লীগ কোনো নির্বাচন করার চেষ্টা করলে এবার তা শক্তভাবে প্রতিহত করারও ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি-জামায়াত জোট।
বিএনপি-জামায়াত জোটের দাবি, নির্বাচনের সময় বর্তমান সরকারকে সরে দাড়াতে হবে। নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার গঠন করতে হবে। নির্বাচনকালীন এ সহায়ক সরকারের দাবিতে বড় ধরণের আন্দোলনে যাওয়ারও প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি-জামায়াত। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও বলেছেন শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রেখে কোনো নির্বাচন নয়।
নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার নিয়ে যখন দেশের রাজনীতিতে উত্তেজনা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে, ঠিক তখনই প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা বললেন আওয়ামী লীগে সরকার ক্ষমতায় থাকলেও সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব।
তার এ বক্তব্য নিয়ে এখন আবার নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। তার বক্তব্যে প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হয়েছে বিএনপি-জামায়াত। এ যেন জ্বলন্ত আগুনে ঘি ঢেলে দেয়ার মতো।
নুরুল হুদার বক্তব্যে অনেকের মধ্যেই সন্দেহ-সংশয় দেখা দিয়েছে। তার এ বক্তব্য সাহসী নাকি দূরভিসন্ধি এমন প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে।
রাজনীতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নুরুল হুদা সাহসী বক্তব্য দিলেও নির্বাচনে এর কোনো প্রতিফলন দেখাতে পারবেন না। কারণ, আগের নির্বাচন কমিশনও অনেক হুংকার ছেড়েছিলেন। কিন্তু, কাজের কাজ কিছুই করতে পারেনি। বর্তমান কমিশনের বেলায়ও সেটাই হবে।
আবার কেউ কেউ মনে করছেন, নুরুল হুদার এ বক্তব্য দূরভিসন্ধিমূলক। এ বক্তব্য তার নিজের না। এটা সরকারের শেখানো বুলি মাত্র। এ বক্তব্যের মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াতকে নিয়ে আনার ফন্দি আটছেন নুরুল হুদা। তার কথায় যদি বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের অধীনে আগামী নির্বাচনে অংশ নেয় তাহলে তাদেরকে চরম খেসারত দিতে হবে।
Discussion about this post