অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করে সরকার থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাবেক স্বৈরশাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের দায়িত্ব থেকেও পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এরশাদ। পরিপূর্ণ বিরোধীদল হওয়ার জন্য সরকার থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে এমন দাবি করা হলেও জানা গেছে সরকারের পরিকল্পনাতেই এসব হচ্ছে।
জানা গেছে, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে যদি বিএনপি-জামায়াত জোট আগামী নির্বাচনে অংশ না নেয় তাহলে আগেরমতো এরশাদের জাতীয় পার্টিকেই আওয়ামী লীগের বিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করাবে। এ লক্ষ্যে এরশাদকে দিয়ে বড় আকারের একটি রাজনৈতিক জোটও করাচ্ছে সরকার। আগামী ৭ এপ্রিল এরশাদের নেতৃত্বে ৭০ দলের সমন্বয়ে একটি জোটের আত্মপ্রকাশের কথা রয়েছে। এ জোট গঠনের পর মূলত সরকারের নতুন এজেন্ডা বাস্তবায়নেই মাঠে নামবে এরশাদ।
গত ৩০ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবে ৩৪টি নামসর্বস্ব ইসলামি দলের সমন্বয়ে জাতীয় ইসলামি মহাজোটের ঘোষণা দিয়েছেন এরশাদ। ওই দিনই এরশাদ বলেছিলেন যে আরেকটি জোট তারা গঠন করবে। আগের জোটের সঙ্গে এখন আরও ৩৬ দল যোগ করে মোট ৭০ দলীয় এক বিশাল জোটের ঘোষণা দেবে আগামী ৭ এপ্রিল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যে ৬৯টি দল নিয়ে এরশাদ ঐতিহাসিক জোট ঘোষণা করতে যাচ্ছে সেইসব দলের একটিরও কোনো অস্তিত্ব নেই। সবগুলোই নিবন্ধনহীন। এগুলোর মধ্যে অধিকাংশ দলের সভাপতি-সেক্রেটারি ছাড়া আর কোনো লোক নেই। নির্বাচনের আগে কয়েকটি দলের নিবন্ধন দেয়ার জন্য এরশাদ সরকারের কাছে অনুরোধ জানাবে বলেও জানা গেছে।
রাজনৈতিক জোট গঠন নিয়ে এরশাদ অনেক দিন ধরে হাঁকডাক ছাড়লেও নিবন্ধিত কোনো দল এরশাদকে পাত্তাই দিচ্ছে না বলে জানা গেছে। অনেকগুলো দলের সঙ্গে এরশাদ বৈঠক করেছেন। কিন্তু, জোট গঠন নিয়ে কেউ এরশাদকে আশ্বাস দেয়নি। তাকে কেউ বিশ্বাস করতে পারছে না।
তাদের বক্তব্য হলো, এরশাদের সঙ্গে জোটে গেলে মানসম্মান থাকবে না। কারণ, এরশাদ চলে কথায়। কখন কী করে বসে বলা যায় না।
অপরদিকে, এরশাদের এ সিদ্ধান্তে নিজ দলের নেতাদের মধ্যেই চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। জাতীয় পার্টির একজন কেন্দ্রীয় নেতা এ বিষয়ে বলেন, এতদিন মানুষ আমাদেরকে বলতো সরকারের গৃহপালিত বিরোধীদল। এখন সরকার থেকে বেরিয়ে গণবিচ্ছিন্ন দল নিয়ে জোট করার পর মানুষ কী উপাধি দেয় সেটা দেখার অপেক্ষায় আছি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা এখন মানুষের হাসির খোরাকে পরিণত হয়েছি।
রাজনীতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এরশাদের এ উদ্যোগ সফল হবে না। জোটের একটিও নিবন্ধিত দল নয়। মানুষ এসব দলের নামও কখনো শুনেনি। সারাদেশে তাদের কোনো ভোটও নেই। মামলা থেকে খালাস পাওয়ার জন্য মূলত এরশাদ এসব করছে। এটা সরকারের চাল।
Discussion about this post