অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক:
পুলিশ-বিজিবি আর র্যাবের পর এবার প্রশাসনের সর্বোচ্চ জায়গা সচিবালয়ে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মার্কিন ভিসা নীতি প্রণয়নের পর থেকেই বিভিন্ন পর্যায়ের সচিবদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর গুম, খুন, অপহরণ, হয়রানি ও বিগত দুইটি ভোট ডাকাতির নির্বাচনের সাথে জড়িত ছিল এমন কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরি করেছে বিএনপি। এই তালিকাও তাদের আতঙ্ককে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ বিগত দুইটি নির্বাচনের সাথে প্রশাসনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাই জড়িত ছিলেন।
জানা গেছে, সচিবদের আতঙ্কের বিষয়টি সরকারও বুঝতে পেরেছে। এখন সচিবদের মনোবল ধরে রাখতে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
গত মাসের শেষ দিকে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতি প্রণয়ন করে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী নির্বাচনে যারা বাঁধা দিবে, যারা হুকুম দিবে ও যারা বাস্তবাযন করবে, গণতান্ত্রিক সভা-সমাবেশে যারা বাধা দিবে ও যারা হুকুম করবে তাদের ভিসা বাতিল করবে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি যারা এসব কাজে জড়িত থাকবে-যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত তাদের পরিবার-সন্তানদের ভিসাও বাতিল করবে যুক্তরাষ্ট্র। এই ভিসা নীতি প্রণয়নের পর থেকেই মূলত প্রশাসনসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ের গুরুত্বপূর্ণ একটি রুমে প্রশাসনের সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ চার কর্মকর্তা মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জণনিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফিজুর রহমান রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। বৈঠকে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একজন মন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন। সূত্রটি জানিয়েছে, সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এই বৈঠক করা হয়েছে।
প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টা ব্যাপী চলা এই বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় ছিল-নির্বাচন পর্যন্ত কিভাবে কর্মকর্তাদের মনোবল ধরে রাখা যায়, ভয়ভীতি দূর করে তাদের মধ্যে কিভাবে আরও চাঙ্গাভাব সৃষ্টি করা যায় এবং কর্মকর্তাদের মধ্যে এমন একটা সংবাদ দেয়া যে, ভিসা নীতি কিছু হবে না। বর্তমান সরকারই আবার ক্ষমতায় আসছে। সূত্রটি জানিয়েছে, ভিসা নীতির পর থেকে বিএনপি-জামায়াত বিনা বাঁধায় সভা-সমাবেশ করছে। পুলিশ তাদেরকে কিছুই বলছে না। যেটা বিগত ১২ বছরের মধ্যে নজিরবিহীন ঘটনা। তাদের ধারণা এসব ভিন্ন কিছু ইঙ্গিত দিচ্ছে। তারা মনে করছেন, এখন যা হচ্ছে সবই হচ্ছে মার্কিন চাপে। এমন চাপ অব্যাহত থাকলে সরকার এক সময় ক্ষমতা ছেড়ে দিতেও বাধ্য হবে। কারণ, বিরোধীদল মাঠে নেমে গেলে সরকারের পক্ষে আর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে না।
তবে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বৈঠকে উপস্থিত থাকা মন্ত্রী তাদেরকে বলেছেন, সরকার কূটনৈতিকভাবে এসব সমাধানের চেষ্টা করছে। এছাড়া, ভারত, চীন ও রাশিয়া আমাদের সাথে আছে। আমেরিকা এসব করতেছে শুধু স্বার্থের জন্য। তারা কিছু পেলেই আর হৈ চৈ করবে না। সুতরাং, এসব নিয়ে আপনাদেরকে চিন্তা করতে হবে না। যা করার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করবেন।
Discussion about this post