অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক:
বাংলাদেশের প্রধান দুই বন্দর চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর বাংলাদেশের মানুষের চিরশত্রু ভারতকে ব্যবহারের চুড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। শেখ হাসিনা এমন একটা সময় ভারতকে দুইটি বন্দর ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে যখন আগামী সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র ৮ মাস বাকী। এ কারণে বিষয়টি খুব তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ।
দেখা গেছে, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেই শেখ হাসিনা সারাদেশে শত শত কথিত উন্নয়ন প্রকল্পের সাইনবোর্ড ঝুলায়। এসব প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য দ্বারস্থ হয় চীনের কাছে। আর চীনতো টাকার বস্তা নিয়ে বসাই ছিল যে কখন বাংলাদেশ তার কাছে সহযোগীতা চাইবে। চাইতে দেরি হলেও চীনের কাছ থেকে অর্থ পেতে হাসিনার দেরি হয়নি। পদ্মা সেতু নির্মাণেও ব্যাপক সহযোগিতা করেছে চায়না কোম্পানি। তারপরও পদ্মাসেতুর রেল লাইনেও রয়েছে চীনের অর্থায়ন। বিশেষ করে করোনা মহামারির সময় বাংলাদেশকে প্রচুর টিকা অনুদান দিয়েছে চীন। এভাবেই শেখ হাসিনা চীনের সাথে গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলে।
অপরদিকে, চীনের সাথে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগের পুরনো বন্ধু ভারত ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। কারণ, চীনের প্রধান শত্রু হল ভারত। ভারত কখনো প্রত্যাশা করেনি যে চীনের সাথে শেখ হাসিনা এমন সু-সম্পর্ক গড়ে তুলবে। শত্রুর সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ককে কোনভাবে মেনে নিতে পারছে না ভারত। বিগত কয়েক বছরে বিভিন্ন বক্তৃতা-বিবৃতি ও আচরণের মাধ্যমে ভারত শেখ হাসিনাকে বুঝিয়ে দিয়েছে যে আমরা তোমার সাথে আর নাই। এমনকি চীন থেকে বেরিয়ে না আসলে আগামীতে আওয়ামী লীগকে আর কোনো সহযোগিতা করবে না বলেও জানিয়েছে ভারত। কয়েক বছর ধরেই ভারতের সাথে শেখ হাসিনা, তার সরকার ও দলের সম্পর্ক খারাপ যাচ্ছে।
এদিকে আগামী নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে শেখ হাসিনার অশ্বস্তি ততই বাড়ছে। কারণ, জনগণের ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার কোনো সুযোগ তাদের নাই। নির্বাচনের নামে কোনো একটা মেকানিজম করেই তাদেরকে ক্ষমতায় আসতে হবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন ছাড়াও আবার ম্যাকানিজম করা সম্ভব হবে না। আর এ ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার সবচেয়ে ঘনিষ্ট ও সাহায্যকারী হল ভারত। কারণ, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে ভারতের পরামর্শ এবং সহযোগিতায়ই শেখ হাসিনা নির্বাচনে আকাম করেছিল। তাই আগামী নির্বাচনেও ভারতের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সহযোগিতা ছাড়া শেখ হাসিনার পক্ষে ক্ষমতায় আসা সম্ভব হবে না।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ভারতকে কাছে পেতে এবং আগামী নির্বাচনে সাপোর্ট পেতে সম্পর্ক বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছে শেখ হাসিনা। আর এরই অংশ হিসেবে জাতীয় নির্বাচনের মাত্র ৮ মাস আগে ভারতকে দেশের প্রধান দুই বন্দর ব্যবহারের অনুমোতি দিয়েছে শেখ হাসিনা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্ষমতা ধরে রাখা ছাড়া শেখ হাসিনার সামনে আর কোনো পথ নাই। আর হাসিনা নিশ্চিতভাবেই জানেন যে সুষ্ঠু নির্বাচন দিলে তার দলের প্রার্থীরা সবাই জামানত হারাবে। তাই অতীতের মতো আগামী নির্বাচনেও ভারতের সাপোর্ট পেতে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে শেখ হাসিনা। কারণ, শেখ হাসিনার কাছে সব সময়ই দেশের স্বার্থের চেয়ে ক্ষমতা বড়। ক্ষমতার জন্য তিনি দেশ বিক্রি করে দিতেও দ্বিধা করেন না।
Discussion about this post