• যোগাযোগ
রবিবার, জুলাই ১৩, ২০২৫
Analysis BD
  • মূলপাতা
  • বিশেষ অ্যানালাইসিস
  • রাজনীতি
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • কলাম
  • ব্লগ থেকে
No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • বিশেষ অ্যানালাইসিস
  • রাজনীতি
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • কলাম
  • ব্লগ থেকে
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home Home Post

পাটের পর চামড়া শিল্পও ধ্বংসে মত্ত হাসিনা!

জুলাই ২৪, ২০২১
in Home Post, slide, বিশেষ অ্যানালাইসিস
পাটের পর চামড়া শিল্পও ধ্বংসে মত্ত হাসিনা!
Share on FacebookShare on Twitter

অ্যাসলাইসিস বিডি ডেস্ক

কথিত উন্নয়নের দাবিদার শেখ হাসিনা বিগত ১২ বছরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি শিল্পকে একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছে। পাটকে বলা হতো বাংলাদেশের সোনালী আশ। আন্তর্জাতিক বাজারেও বাংলাদেশের পাটের খুব কদর ছিল। প্রতিবছর বিদেশে পাট রপ্তানি করে বাংলাদেশ কয়েক বিলিয়ন ডলার আয় করতো। অপরদিকে, পাট উৎপাদন করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকরাও ছিল সাবলম্বী। কিন্তু বাংলাদেশের পাট শিল্পের এই উন্নতি সহ্য করতে পারেনি প্রতিবেশী দেশ ভারত। বাংলাদেশের পাট শিল্পকে ধ্বংস করার জন্য তারা উঠেপড়ে লেগে যায়। বাংলাদেশে তাদের সেবাদাস হিসেবে পরিচিত শেখ হািসনাকে দিয়েই পাট শিল্পকে ধ্বংসের কাজটা শুরু করে। আর শেখ হাসিনাও ভারতের পরামর্শে কথিত উন্নয়নের নামে একেএকে দেশের পাট কলগুলো বন্ধ করতে থাকে। এভাবে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে দেশের পাট শিল্পকে।

পাট শিল্প ধ্বংসের পর ভারতের চোখ পড়েছে বাংলাদেশের চামড়া শিল্পের উপর। পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তর মুসলিম দেশ বাংলাদেশ। গরুর মাংশ মুসলমানদের একটি প্রিয় খাবার। তাই সারাবছরই বাংলাদেশে পশু জবাই করা হয়। বিশেষ করে কোরবানির ঈদের মুসলমানরা আল্লাহর হুকুম পালনে গরু-মহিষ ও ছাগল কুরবানি করে থাকে। তাই শুধু চামড়া নয়, চামড়ার তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্রও বিদেশে রপ্তানি করা হয়। আর রপ্তানি থেকে প্রতিবছর আয় হয় কোটি কোটি ডলার।

দেখা গেছে, বাংলাদেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য বিদেশেও পরিচিতি পায় এবং দ্বিতীয় বৃহৎ রপ্তানি পণ্য হিসাবে পরিগণিত হয়। ২০১৩-১৪ সালে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে আয় হয় ১২৫৮ দশমিক ৮২ মিলিয়ন ডলার। পরবর্তী তিন অর্থবছরে এ খাতের রপ্তানি আয় ছিল যথাক্রমে ১১৩০, ১১৬১ ও ১২৩৪ মিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশের চামড়া শিল্পের এই উন্নতিকেও সহ্য করতে পারছে না ভারত। চামড়ার তৈরি পণ্য রপ্তানি করতেই তারা বাংলাদেশের চামড়া শিল্পকে নিশ্চহ্ন করার জন্য বিভিন্নভাবে চক্রান্ত করে যাচ্ছে। আর তাদের এই চক্রান্তের ফাঁদে পা দিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। দেখা গেছে, বিগত তিন বছর ধরে কুরবানির ঈদের সময় চামড়ার বাজারে ধ্বস নামে। কথিত সিন্ডিকেটের দোহাই দিয়ে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেকৃতভাবে চামড়া কিনা থেকে বিরত থাকে। সঠিক মূল্যা না পেয়ে অনেকেই চামড়া রাস্তায়, নদীতে ও ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেয়।

২০১৭ সালের পর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এ খাতের রপ্তানি আয় কমে ১০১৯ দশমিক ৭৮ মিলিয়ন ডলার। এরপর থেকে কমতে শুরু করে। এরপর ২০১৯-২০ অর্থবছরে রপ্তানি আয় কমে গিয়ে ৭৯৭ দশমিক ৬১ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়। রপ্তানি আয়ের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থান হারিয়ে চামড়া খাত তৃতীয় স্থানে নেমে এসেছে।

ময়লার ভাগাড় ও রাস্তায় পড়ে আছে চামড়া

আওয়ামী লীগের চামড়া সিন্ডিকেটের স্বার্থ রক্ষায় সরকার গত বছরের মতো এবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। নানা অজুহাতে চামড়ার দাম কমানো হয়েছে গত বছরের তুলনায় প্রায় ২৯% কম। গত বছর কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্য দাম না লক্ষাধিক চামড়া মাটিচাপা কিংবা নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছিল।চামড়ার মূল্য না থাকায় স্মরণকালের ভয়াবহ বিপর্যয়ে পড়ে দেশের চামড়ার বাজার। দামে ধ্বস নামায় প্রায় হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়। পাশাপাশি এই টাকা থেকে বঞ্চিত হয় গরিব ও এতিম জনগোষ্ঠী।

দেখা গেছে, এবছরও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চামড়ার সঠিক মূল্যা না পেয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীরা রাস্তায় ও ময়লার বাগারে চামড়া ফেলে দিয়েছে। রাজধানীতেও চামড়ার দাম না পেয়ে রাস্তায় ফেলে দিয়েছে ছোট ব্যবসায়ীরা।

পুরান ঢাকা, বগুড়া, দিনাজপুর, টাঙ্গাইল, শরীয়াতপুরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ময়লার স্তুপ কিংবা নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছে গরিবের হক কুরবানির পশুর চামড়া।

দেখা গেছে, বগুড়ায় চাহিদা মতো সংগ্রহ করতে না পেরে ও লোকসানের ভয়ে অনেক সাধারণ ব্যবসায়ী ঈদের পরদিন শহরের বাদুড়তলা, চকসুত্রাপুর, চামড়া গুদাম লেন এলাকায় রাস্তার পাশে গরু, ছাগল ও গরুর মাথার চামড়া ফেলে দেন।

পৌরসভার পরিচ্ছন্নকর্মীরা স্তুপ থেকে চামড়াগুলো সংগ্রহ করে ট্রাকে তুলে শহরের বাইরে গোকুলের ভাগাড়ে ফেলে দিয়েছেন। ফেলে দেওয়া এসব চামড়া পঁচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

পরিচ্ছন্নকর্মীরা জানিয়েছেন, ফেলে দেয়া অন্তত ১৪ হাজার চামড়ার মধ্যে ছাগলের চামড়া ও গরুর মাথার চামড়াই বেশি।

শহরের বাদুড়তলার চামড়া ব্যবসায়ী মোকাররম আলী, কামরুল হোসেন, সারোয়ার হোসেন প্রমুখ জানান, রাস্তার পাশে স্তুপ করে ফেলে দেয়া চামড়ার মধ্যে কুরবানির ছাগল ও গরুর নিম্নমানের চামড়া রয়েছে। এ মৌসুমে ব্যবসায়ীরা তাদের চাহিদা মতো চামড়া সংগ্রহ করতে পারেননি। ছাগলের চামড়ার চাহিদা এবারও কম। যেসব মৌসুমী ব্যবসায়ী ছাগলের চামড়া কিনেছেন তাদের বেশিরভাগ লোকসান গুনছেন। ছাগলের চামড়া ১০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা আরও কম দামে কিনেছেন। দাম না থাকায় অনেকে ক্ষুব্ধ হয়ে চামড়া ফেলে দিয়ে গেছেন। রাস্তার পাশে পড়ে থাকা চামড়াগুলো পৌরসভার ট্রাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ব্যবসায়ীরা আরও জানান, গত বছরে চেয়ে এবার আমদানি অনেক কম। শহরে কুরবানি বেশি হলেও গ্রামে কম হয়েছে। তারপরও চামড়ার দাম বাড়ছে না।

বুধবার সকাল থেকে শহরের থানা মোড় থেকে চকসুত্রাপুর পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা চামড়া কেনার জন্য স্থায়ী ও অস্থায়ী দোকান খুলে বসেন। তবে বিগত বছরের মতো আমদানি কম লক্ষ্য করা গেছে।

কুরবানির গরুর চামড়া ৩০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮৫০ টাকায় বিক্রি হয়। ছাগলের চামড়া ১০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৪০ টাকা। ভেড়ার ও ছোট খাসির চামড়া পাঁচ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে।

আবার শহরের একটু বাইরে চাঁদমুহা, বারপুর, ঘোড়াধাপসহ বিভিন্ন এলাকায় মৌসুমী ব্যবসায়ীরা গরুর চামড়া ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ৫৫০ টাকায় কিনেছেন। ছাগলের চামড়া ১০ টাকা থেকে ২০ টাকা ও ভেড়ার চামড়া পাঁচ টাকায় কেনেন।

একটি মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের শিক্ষক বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের চকসুত্রাপুর এলাকায় কয়েকটি ছাগলের চামড়া ফেলে দেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই শিক্ষক জানান, সাতটি গরুর চামড়া ও ১১টি খাসির চামড়া দান পেয়েছেন। গরুর চামড়া ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। কেউ খাসির চামড়া না নেওয়ায় ফেলে দিতে বাধ্য হন।

বগুড়া শহরের সুলতানগঞ্জপাড়ার ব্যাংকার মামুনুর রশিদ, রাজন ও সায়েদ আলী জানান, তারা পাঁচ ভাগে ৮৭ হাজার টাকায় একটি গরু কেনেন। কয়েকদিন খাওয়ানোর পর প্রায় ৯০ হাজার টাকা দাম পড়ে যায়। কুরবানির পর সে গরুর চামড়া মাত্র ৫০০ টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে।

শহরের কাটনারপাড়ার ব্যবসায়ী আবদুর রহমান জানান, তিনি ৭১ হাজার টাকায় কেনা গরুর চামড়া বিক্রি করেছেন মাত্র ৪০০ টাকায়। তার ১৮ হাজার টাকা মূল্যের খাসির চামড়ার দাম নেই। তাই চামড়াটি একটি মাদ্রাসায় দান করেছেন।

শহরের সুত্রাপুর এলাকার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ৬৭ হাজার টাকা মূল্যের গরুর চামড়া বিক্রি করেছেন মাত্র ৪০০ টাকায়। দুটি ভেড়ার চামড়ার দাম ১০ টাকা দিতে চাওয়ায় বিক্রি করেননি। পরে চামড়া দুটি ফেলে দিয়েছেন।

কয়েকজন মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী জানান, গত ৮-১০ বছর ধরে তারা চামড়া কেনাবেচা করছেন। তবে গত ৩-৪ বছর ধরে তাদের ব্যবসায় মন্দাভাব যাচ্ছে। চামড়ার দাম না থাকায় পুঁজি হারিয়ে তাদের অনেকে এবার ব্যবসা থেকে সরে গেছেন। সে কারণে তারা এবার আড়ত থেকে দাম জেনে নিয়েই কম দামে কিনছেন।

বৃহস্পতিবার বিকালে বগুড়া সদরের গোকুল এলাকায় ময়লার ভাগাড়ে গিয়ে দেখা গেছে, পৌরসভার পরিচ্ছন্নকর্মীরা ট্রাকে আনা পঁচন ধরা চামড়াগুলো ফেলছেন।

তারা জানান, এসব চামড়া শহরের বাদুড়তলা, চকসুত্রপুর, চামড়াগুদাম এলাকায় পড়েছিল। তাদের হিসাবে সকাল থেকে প্রায় ১০ হাজার গরু-ছাগলের চামড়া ভাগাড়ে ফেলেন।

বগুড়া চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মতিন সরকার জানান, পঁচে যাওয়ার কারণে নিম্নমানের গরুর চামড়া ফেলে দেয়া হচ্ছে। এছাড়া ছাগলের চামড়ার চাহিদা কম থাকলেও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা অনেক কেনেন। দাম না পেয়ে তারা ছাগলের চামড়াগুলো ফেলে দিয়েছেন। আমরা দ্রুত চামড়াগুলো অপসারণ করছি।

ব্যবসায়ী এই নেতা আরও বলেন, তাদের ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানের ট্যানারি মালিকদের কাছে ২৫ কোটির বেশি টাকা পাওনা রয়েছে। অথচ ট্যানারি মালিকরা তাদের পাওনা টাকা পরিশোধ করছে না। ট্যানারি মালিকরা টাকা না দেওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী নিঃস্ব হয়ে গেছেন। একটি চামড়া কেনার পর তা প্রসেসিং করতে অনেক খরচ হয়। এ কারণে আড়তদারদের চামড়ার ব্যাপারে আগ্রহ কম ছিল।

এছাড়া দিনাজপুরের সর্ববৃহৎ চামড়ার বাজার রামনগরে দেখা যায়, রাস্তার ধারে ও ময়লার ভাগাড়ে ছাগলের চামড়া পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এদিকে ব্যবসায়ীদের অভিযোগের তীর ট্যানারি মালিকদের দিকে। এ অবস্থায় বিভাগীয় পর্যায়ে ট্যানারি শিল্প প্রতিষ্ঠা ও তৃণমূল পর্যায়ে চামড়া ব্যবসায়ীদের জন্য ঋণের ব্যবস্থা করার দাবি তাদের।

সরেজমিন দেখা যায়, রামনগর এলাকার চামড়ার বাজারে তিন থেকে চার জন এক জোট হয়ে চামড়া পরিষ্কার করা, লবণ প্রয়োগ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজে ব্যস্ত। কেউ ব্যস্ত গাড়ি থেকে চামড়া খালাসের কাজে। অন্যদিকে রাস্তায় পাশে স্তূপ করে ছাগলের চামড়া ফেলে রাখা হয়েছে। আবার ময়লার মধ্যে পড়ে রয়েছে চামড়া। পচে যাওয়া চামড়াগুলো স্তূপ করে রাখা হয়েছে। পৌরসভার ময়লা পরিবহন কাজে ব্যবহৃত গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সেগুলো। এদিকে যারা ছাগলের চামড়া বিক্রি করতে আসছেন, এক ধরনের রসিকতা করেই তাদেরকে ফিরিয়ে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

চামড়া বিক্রি করতে আসা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা আগে যেই চামড়া তিন হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতাম, সেগুলো এখন ১০০ থেকে দেড়শ টাকাও বলে না। এখন চামড়া মাটিতে পুঁতে দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই। কিন্তু কী করার, অটোর ভাড়া দিয়ে আসা, তাই যে দাম দেয় তাতেই দিয়ে চলে যাচ্ছি।’

আদনান হোসেন বলেন, ‘আমি ৭ নম্বর উপশহর থেকে এসেছি। যেই হিসাবে চামড়ার দাম আশা করেছিলাম, সেই হিসাবে পেলাম দাম না। আশা করছিলাম ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হবে। কিন্তু পেলাম ৩০০ টাকা।’

রনি নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমি কারও নাম ধরে বলতে চাই না। কালকে (বুধবার) ছাগলের চামড়া কিছু কিনেছে, আজ সকালেও কিনলো। এখন আবার নিচ্ছে না। বড় বড় চামড়াগুলো ছয় ফুটের বেশি, তাও নিচ্ছে না। বড় বড় চামড়া ব্যবসায়ী যারা তাদের এটা সিন্ডিকেট। আমি খাসির চামড়া তিনটা নিয়ে আসছিলাম, একটাও নিলো না, সব ফেলে দিছে। ওরা না নিলে কী করবো, মারামারি তো আর করা যাবে না। গরিবের হক মারে খাচ্ছে।’

গ্রাম থেকে চামড়া সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করতে আসা ফারুক বলেন, ‘আমি চারটা ছাগলের চামড়া নিয়ে এসেছি। কিন্তু এখানে ছাগলের চামড়া নিতেই চাচ্ছেন না। চামড়া যারা কিনবেন তারাই বলছেন, ফেলে দিয়ে চলে যান। সবটাই লস! অটো করে নিয়ে আসলাম, অটো ভাড়াটাও গেলো। ফেলে দেওয়া ছাড়া আর কিছু করার নেই।’

চামড়া বিক্রি করতে আসা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘গ্রাম থেকে চামড়া কিনে এই বাজারে বিক্রি করি। সরকার আমাদের ছোট চামড়ার ব্যবসায়ীদের জন্য কিছুই করে না। বাজারে চামড়ার দাম নেই। সরকার যেন এই বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখে। ট্যানারি শিল্প কী করছে? আমাদের দিকে কারও নজর নেই। জায়গা-জমি বিক্রি করে আজ এই ব্যবসা করছি। দুই বছর থেকে লাভের মুখ ভালো করে দেখতে পাই না। যা প্রণোদনা দিচ্ছে সব পায় ট্যানারি মালিকরা।’

এস কে লেদারের স্বত্বাধিকারী আব্দুল শুকুর বলেন, ‘আমি এখানে সারা বছরই চামড়ার ব্যবসা করি। কাল (বুধবার) থেকে খাসি, গরুর চামড়া কিনছি। লবণজাত করছি এখন। পরিষ্কার করা সময় দুই থেকে আড়াইশ চামড়া ফেলে দিতে হয়েছে। এখন দেখি আল্লাহ কী করেন। কোম্পানি যে কী দামে কিনবে তা তো জানি না। পত্রিকা পড়ে জানতে পারছি, বকরির (ছাগলের) চামড়া ১৫ থেকে ১৬ টাকা ফুট নেবে। সেই আশায় চামড়া কেনা।’

তিনি আরও বলেন, ‘কোম্পানি আমাদের দর দেয়নি, যে তারা কোন দামে কিনবে। কোম্পানির আশায় কেনা, দেখি কোম্পানি কী করে। তাছাড়া আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখেই। যাদের টাকা বেশি তাদের ব্যবসা আছে। আমাদের মত পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে বসা ব্যবসায়ীদের লোকসান আর লোকসান।’

চামড়া ব্যবসায়ী মালিক গ্রুপের সভাপতি জুলফিকার আলি স্বপন বলেন, ‘আগে চামড়া ব্যবসায়ী কোটিপতি ছিল। এখন রাতে অনেকেই কাঁদে। এবার আমরা খালি হাতে ব্যবসায় নেমেছি। গত বছরের তুলনায় এবছর চামড়ার দাম বেশি। গত বছর যে চামড়া বিক্রি কিনেছি ৪০০ টাকায়, এবার সেটা কিনছি ৬০০ টাকায়। তবে এবার চামড়ার আমদানি কম, অনেকেই কোরবানি দেননি। তাই দাম বেশি থাকলেও বাজারে টাকার লেনদেন গত বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশ কম হয়েছে।’

চামড়া শিল্পের সংকট নয় পরিকল্পিত ভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে

চামড়া শিপ্লের বর্তমান অবস্থাকে কোন ভাবেই সংকট বলতে রাজি নন বিশ্লেষকরা।  তারা বলছেন, পাট শিল্পের মতো ট্যানারি শিল্পকেও পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করছে ক্ষমতাসীন সরকার। চামড়া শিল্প ধ্বংস হলে গরিব, দুঃখী ও এতিমদের হক নষ্ট হয়। সরকারের ভেতরের একটি মহল সিন্ডিকেট করে কওমি মাদরাসাকে ধ্বংস করতে এবং চামড়া শিল্পকে ধ্বংস করে ফায়দা লুটতে চায় বলে মনে করছেন তারা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগের চামড়া সিন্ডিকেটের স্বার্থ রক্ষায় সরকার গত বছরের মতো এবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। নানা অজুহাতে চামড়ার দাম কমানো হয়েছে গত বছরের তুলনায় প্রায় ২৯% কম। গত বছর কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্য দাম না লক্ষাধিক চামড়া মাটিচাপা কিংবা নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছিল। চামড়ার মূল্য না থাকায় স্মরণকালের ভয়াবহ বিপর্যয়ে পড়ে দেশের চামড়ার বাজার। দামে ধ্বস নামায় প্রায় হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়। পাশাপাশি এই টাকা থেকে বঞ্চিত হয় গরিব ও এতিম জনগোষ্ঠী। করোনার কারণে চামড়া নিয়ে এবারও সেই সঙ্কট আরও বেশি হয়েছে। লুটপাটের কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে চরম অর্থ সঙ্কট চলছে। এ কারণে এবারও ট্যানারি মালিকরা ব্যাংক থেকে কোনো টাকা দেয়া হয়নি।

সম্পর্কিত সংবাদ

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা
Home Post

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫
মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব
Home Post

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫
ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?
Home Post

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫

Discussion about this post

জনপ্রিয় সংবাদ

    সাম্প্রতিক সংবাদ

    জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

    জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

    মে ৩১, ২০২৫
    মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

    মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

    মে ২১, ২০২৫
    ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

    ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

    মে ২১, ২০২৫
    নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করতে হবে

    নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করতে হবে

    এপ্রিল ৩০, ২০২৫
    আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন ধারার প্রবর্তন অপরিহার্য

    আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন ধারার প্রবর্তন অপরিহার্য

    এপ্রিল ৩০, ২০২৫
    • Privacy Policy

    © Analysis BD

    No Result
    View All Result
    • মূলপাতা
    • বিশেষ অ্যানালাইসিস
    • রাজনীতি
    • জাতীয়
    • আন্তর্জাতিক
    • মতামত
    • কলাম
    • ব্লগ থেকে

    © Analysis BD