অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বর্তমানে সবচেয়ে আলোচনার বিষয় হলো ফ্রান্সে সরকারিভাবে হযরত মোহাম্মদ (স)কে অবমাননা করার বিষয়টি। সারা বিশ্ব ক্ষোভে ফুঁসছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা। ঠিক তখন বাংলাদেশ সরকার নিরব ভূমিকায়। সরকারের এই নিরবতা জনমনে দেখা দিয়েছে বিভিন্ন প্রশ্ন।
দেখা গেছে, বাংলাদেশ সরেকারের ইসলামের প্রতি ধৃষ্টতা নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন সময় ইসলাম ধর্ম নিয়ে কুটক্তি, ধর্মের অবমাননা করে আসছে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। ইসলাম ধর্মকে নিয়ে কুটক্তি করেছেন সরকার দলের প্রধানমন্ত্রীও। কিন্তু নির্বাচন আসলেই দেখা যায় ধার্মিক হয়ে যান।
মোহাম্মদ (স) আল্লাহর পক্ষ থেকে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ট নবী। তিনি শুধু মুসলমানদের নন, গোটা বিশ্ববাসীর জন্য রহমত সরুপ। তিনি শুধু মুসলমানদের কাছেই প্রিয় নন, শত শত অমুসলিম বিজ্ঞানী-দার্শনিকও তাকে শ্রেষ্ট মানব বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন। আর একজন মানুষকে মুসলমান হতে হলে আল্লাহর পরই তাকে রাসুলের উপর ইমান আনতে হবে। শুধু ইমান নয়, পরকালে জাহান্নামের আযাব থেকে মুক্তি পেতেও দুনিয়ার সব কিছুর চেয়ে রাসুলকে বেশি ভাল বাসতে হবে। তাই মুসলমানরা তাদের জীবনের চেয়েও রাসুলকে বেশি ভালবাসে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রো যে একজন চরম ইসলাম বিদ্বেষী সেটা বিশ্ববাসীকে দেখাতেই মূলত মোহাম্মদ (স)এর অবমাননা করেছে। এর আগে ম্যাক্রো বলেছিলেন-সারাবিশ্বে ইসলাম নাকি সংকটে আছে। ম্যাক্রো মনে করেছিল মুসলমানরা হয়তো জোরালো প্রতিবাদ করতে পারবে না।
ম্যাক্রোর এই ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণের প্রতিবাদে সারা বিশ্বের মুসলমানরা ক্ষোভে ফুঁসছে। শুধু মুসলিম বিশ্ব নয়, সব রাষ্ট্রেই মুসলমানরা প্রতিবাদ বিক্ষোভ করছে। মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সরকার প্রধানরা ম্যাক্রোর এই ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
এদিকে, প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলছে বাংলাদেশে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে প্রায় প্রতিদিনই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হচ্ছে।
কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো- বাংলাদেশ একটি মুসলিম দেশ হওয়া সত্ত্বেও রাষ্ট্রপতি-কিংবা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত একটি টু শব্দও করা হয়নি। দেশবাসী আশা করছিল-সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ করা হবে। কিন্তু ঘটনা ঘটেছে বিপরীত।
গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, মোহাম্মদ (স)কে অবমাননার ঘটনায় বাংলাদেশ নিরপেক্ষ থাকবে। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিবাদ করা হবে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেকে একজন ধার্মিক বলে দাবি করে থাকেন। তিনি নাকি সকালে ঘুম থেকে উঠে তাহাজ্জুদের জন্য জায়নামাজ খুজেন। কুরআন তেলাওয়াত না করে নাকি কোনো কাজ করেন না। অথচ, ফ্রন্সে সরকারিভাবে মোহাম্মদ (স)কে অবমাননা করা হলেও তিনি নিরব ভুমিকা পালন করছেন।
স্বাভাবিকভাবেই এখন প্রশ্ন জাগে-মোহাম্মদ (স) এর চেয়ে কি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোর প্রতি হাসিনার ভালবাসা বেশি? নবীর চেয়ে কি হাসিনার কাছে ম্যাক্রোর গুরুত্ব বেশি?
দেখা গেছে, শুধু ফ্রান্স ইস্যুতে নয় সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি জনস্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটে মুসলিম নারী ও পুরুষ কর্মকর্তাদের ইসলাম ধর্মীয় বিধানমতো কাপড় পরে অফিসে যাবার যে নির্দেশ দিলে সরকারের তোপের মুখে তা বাতিল করতে বাধ্য হয়। এছাড়াও ধর্ম ও ইসলামের মৌলিক বিষয় গুলো নিয়েও বিদ্বেষ ছড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নিজেও। গেলো বছর জুন মাসে হিজাব পরিহিত নারীদের নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করেছিলেন। এর মাস ছয়েক পরে আবারও পর্দা নিয় সমালেচনা করে তোপের মুখে পড়েন।