ঢাকায় সফররত বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং গণতান্ত্রিক নির্বাচন দেখতে চায় বৃটেন। একইসঙ্গে মুক্ত গণমাধ্যমের উপস্থিতিও আশা করে তার দেশ।
তিনি বলেন, এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে তার বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তিনি মুক্ত নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।
রাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি করেছে যেটা আমরা দেখছি। আমি কাল রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাবো। বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ায় আমি বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিলেই এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। যুক্তরাজ্যে কার্গো নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নে তার পাশে থাকা বৃটিশ হাইকমিশনার এলিসন ব্লেইক জানিয়েছেন, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার প্রক্রিয়া অনেক দূর এগিয়েছে।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক হয়। বৈঠকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৃটিশ মন্ত্রীর সফরসঙ্গী ছাড়া বৃটিশ হাইকমিশনার বৈঠকে অংশ নেন।
এর আগে গতকাল বিকাল চারটার পরে বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হজরত শাহজালাল (রহ.) বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। ১০ বছরের মধ্যে এই প্রথম কোনো বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা সফরে এলেন।
ঢাকায় এসেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। গণভবনে ওই সাক্ষাৎ পর্বটি হয়। এদিকে ঢাকায় এসেই এক বিবৃতিতে রোহিঙ্গা সংকটকে একটি বেদনাদায়ক মানবিক সংকট উল্লেখ করে এর রাজনৈতিক সমাধানের তাগিদ দেন বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়েই এর সমাধান করতে হবে।
বৃটিশ হাইকমিশন থেকে বরিস জনসনের বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। এতে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট একটি মানবসৃষ্ট সংকট। এটি বড় বেদনাদায়ক একটি মানবিক সমস্যা। এর একটি রাজনৈতিক সমাধান করতে হবে। আমি এখানে এসেছি রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরজমিনে দেখতে। আমি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাবো। কথা বলবো। বাংলাদেশের নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলবো। আমি বার্মা যাবো, নর্দান রাখাইন পরিদর্শন করবো। সেখানে দেশটির স্টেট কাউন্সেলর অং সাং সুচির সঙ্গে এ নিয়ে আমার কথা হবে। আমি থাইল্যান্ডেও যাবো। সেখানে এ বিষয়ে কথা বলবো।
আজ রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি সরজমিন পর্যবেক্ষণে কক্সবাজারস্থ শরণার্থীদের ক্যাম্প পরিদর্শনে যাবেন বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পরে তিনি মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড সফর করবেন।
সূত্র: মানবজমিন