অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা আগামী ১৩ নভেম্বর দেশে ফিরবেন বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে। এসেই তিনি তার পদে বসবেন। আর অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগেও তিনি লিখিত চিঠির মাধ্যমে গণমাধ্যমকে জানিয়ে গেছেন যে, আমি অসুস্থ নই, সম্পূর্ণ সুস্থ। ছুটি শেষে আমি আবার ফিরে আসবো।
এদিকে, প্রধান বিচারপতির ফিরে আসা ও এসে পদে বসা নিয়ে আবারও উত্তেজনা সৃষ্টি হচ্ছে। আর এ উত্তেজনা সৃষ্টির পেছনে কাজ করছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম। গত শনিবার ও সোমবার মাহবুবে আলম নিজ থেকেই গণমাধ্যমকে বলেছেন প্রধান বিচারপতি ফিরে এসে পদে বসা সদূরপরাহত। তিনি যদি আবার প্রধান বিচারপতির পদে বসেন সেটা হবে অবমাননাকর। যদিও এসব তার ক্ষমতার এখতিয়ার বহির্ভূত।
একজন বিচারপতির নিয়োগ ও তাকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার সাংবিধানিক ক্ষমতা হলো রাষ্ট্রপতির হাতে। সংবিধান এই ক্ষমতা কোনো মন্ত্রী বা অ্যাটর্নি জেনারেলকে দেয়নি। অ্যাটর্নি জেনারেল হলেন রাষ্ট্রের বেতনভুক্ত একজন আইন কর্মকর্তা। তার দায়িত্ব হলো আদালতে রাষ্ট্রের ওকালতি করা। প্রধান বিচারপতি তার পদে বসতে পারবেন কি পারবেন না এনিয়ে কথা বলার কোনো অধিকার সংবিধান অ্যাটর্নি জেনারেল দেয়নি।
কিন্তু, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে নিয়ে নিয়মিত সংবিধান বহির্ভূত অনধিকার চর্চা করে যাচ্ছেন।
প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের এখতিয়ার বহির্ভূত বক্তব্য নিয়ে আইন বিশেষজ্ঞসহ বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় হচ্ছে। সাধারণ মানুষের মধ্যেও এনিয়ে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। আইনজ্ঞরা বলছেন, প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে কথা বলার অ্যাটর্নি জেনারেল কে? তিনি রাষ্ট্রের বেতনভুক্ত একজন আইনজীবী। তার দায়িত্ব হলো আদালতে রাষ্ট্রের পক্ষে ওকালতি করা। বিচার বিভাগে কে বসবে আর কে বসবে না এ সিদ্ধান্ত দেয়ার অধিকার তার নেই।
আর রাজনীতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যের মাধ্যমে প্রমাণিত হচ্ছে রাষ্ট্রপতির হাতে এখন আর কোনো ক্ষমতাই নেই। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের সিদ্ধান্তের আলোকেই এখন বিচার বিভাগের সব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। প্রধান বিচারপতির বিষয়ে যদি আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল সিদ্ধান্ত দিতে পারেন তাহলে তো তারাই সব কিছুর হর্তাকর্তা। রাষ্ট্রপতি কি শুধু কাগজে-কলমে আছেন?
Discussion about this post