রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর ইতিহাসের নৃশংস গণহত্যার জন্য নরপিশাচ মায়ানমার সরকারের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার হওয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া।
মি. ভূঁইয়া বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমার সরকারের নির্যাতনে আরাকান আজ জীবন্ত আগ্নেয়গিরিতে পরিণত হয়েছে। মায়ানমার সেনাবাহিনী ও মগ দস্যুদের দফায় দফায় সশস্ত্র হামলায় নিহত হয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। আগুন লাগিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে লাখো বসত-ভিটা-বাড়ি। শত শত নারীকে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়েছে। গণহত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ থেকে বাঁচতে দেশ ছেড়েছে তিন লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। মানবতার এই রক্তক্ষরণ একদিন হয়তো স্বাধীন আরাকান রাষ্ট্রের বীজ বপণে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে ইনশাআল্লাহ।’
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর সরকার পরিচালিত গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ বন্ধ ও তাদেরকে নাগরিকত্ব প্রদান এবং পুনর্বাসনের দাবীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে সোমবার তিনি এসব কথা বলেন। মিছিলটি রাজধানীর গুলিস্তান থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক ও এলাকা প্রদক্ষিণ করে বংশালে গিয়ে শেষ হয়।
মি. ভূঁইয়া আরো বলেন, ‘মায়ানমারে আজ গণতন্ত্রের আড়ালে চলছে হিটলারী স্বৈরতন্ত্র। বৌদ্ধ ধর্মের ‘অহিংসা পরম ধর্ম’ শ্লোগানের আজ অপমৃত্যু ঘটেছে। আরাকানে বৌদ্ধদের এই জঘন্যতম গণহত্যা, বর্বর নির্যাতন ও জাতিগত নিধন পৃথিবীর ইতিহাসকে কলংকিত করেছে। এই নৃশংস গণহত্যার জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে নরপিশাচ মায়ানমার সরকারের বিচার হওয়া উচিৎ। অপরদিকে অর্ধ-বস্ত্রাধীন, আহার-নিদ্রাহীন মৃতপ্রায় এই নারী-পুরুষ ও শিশুরা যখন জীবন বাঁচাতে প্রতিবেশী মুসলিম রাষ্ট্র বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছে তখন বাংলাদেশ সরকারের নির্মম আচরণ ও আন্তর্জাতিক মোড়লদের নিরবতা আমাদের বিবেককে স্তব্ধ করে দিয়েছে।’
তিনি বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের বিবেকবান মানুষকে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর উদাত্ত আহবান জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে তাদের নিরাপদ আশ্রয়, খাদ্য ও চিকিৎসা নিশ্চিত করা। সেই সাথে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যথাযথ দৃষ্টি আকর্ষণের মাধ্যমে এই সংকটের স্থায়ী সমাধান করা।’
সমাবেশে ও মিছিলে নেতাকর্মীদের দাবি ছিল, মিয়ানমারে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন, আন্তর্জাতিক অবরোধ আরোপ, মিয়ানমার সরকার ও সামরিক বাহিনীর গণহত্যার বিচার এবং রোহিঙ্গা মুসলমানদের নাগরিকত্ব ও পুনর্বাসন করা।
বিক্ষোভ মিছিলে আরো উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য আব্দুস সবুর ফকির, মহানগরী শুরা সদস্য মোকাররম হোসাইন খান, কামাল হোসাইন, শামসুর রহমান, আব্দুস সালাম, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় দাওয়াহ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা মহানগরী পূর্বের সভাপতি সোহেল রানা মিঠু, ঢাকা কলেজ সভাপতি আরাফাত সানি, মহানগরী জামায়াত নেতা আমিনুর রহমান, মতিউর রহমান, সগীর বিন সাইদ, শেখ মুহিব্বুল হক ফরিদ, ড. আব্দুল মান্নান, মাওঃ শামীম সাঈদী, ছাত্রনেতা শাহীন আহমদ, তোফাজ্জল হোসাইন, মজিবুর রহমান, মনজুরুল ইসলাম সহ প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
বিজ্ঞপ্তি
Discussion about this post