সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে বঙ্গবন্ধুকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে মন্তব্য করে একদিন তা বাদ যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম।
শনিবার সুপ্রিম কোর্টে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “গ্রামে-গঞ্জে একটি গালি আছে- তা হলো ‘বাপের নাম ভুলিয়ে দিব’। এ রায়ের মাধ্যমে সে অপচেষ্টাটাই হয়েছে; এটা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। একদিন না একদিন এটা রায় থেকে বাদ যাবে।”
বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা বাতিল করে দেওয়া আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশের পর থেকে তা নিয়ে বাদ-প্রতিবাদ চলছে। এই রায়ে সংক্ষুব্ধ হয়ে সরকারি দল আওয়ামী লীগ কড়া সমালোচনা করলেও বিএনপি এটাকে ‘ঐতিহাসিক’ বলছে।
রায় নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি গত সপ্তাহে সংবাদ সম্মেলন ডাকার পর সেখানে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে তুমুল হট্টগোলের ঘটনা ঘটে।
শনিবার সকালেও আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরা ‘ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে প্রধান বিচারপতির অপ্রাসঙ্গিক বক্তব্য, পর্যবেক্ষণের প্রতিবাদে কর্মসূচিও দিয়েছে। সেগুলো স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ।
দুপুরে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে আপিল বিভাগের রায়ে স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়ে যে অভিমত দেওয়া হয়েছে তা সারা দেশের মানুষের বিবেক তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে।
“আদালত বলেছেন যে স্বাধীনতা যুদ্ধ একজনের প্রচেষ্টায় হয়নি- এটা অহেতুক কথা, বঙ্গবন্ধুকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।”
এর আগে সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া একাধিক রায়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “(এটা) প্রতিষ্ঠিত যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, তার একক পরিকল্পনায় স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছে। তিনিই স্বপ্নদ্রষ্টা; বাংলাদেশের নামকরণ করেছেন তিনি।
“দেশে সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছে তার নামে। অথচ বলা হলো, স্বাধীনতা যুদ্ধ একজনের প্রচেষ্টায় হয়নি। এটা বলে সকলের বিবেককে আঘাত করা হয়েছে। শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি করা হয়েছে।”
ষোড়শ সংশোধনী বাতিল রায় নিয়ে সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ জানতে চাইলে মাহবুবে আলম বলেন, “সরকার সিদ্ধান্ত নিলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এর আগে রায়ে প্রধান বিচারপতির ‘অগ্রহণযোগ্য’ বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করার উদ্যোগের কথা বললেও রিভিউ আবেদন করার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছিলেন।
সূত্র: বিডিনিউজ
Discussion about this post