অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
জাতীয় নির্বাচনসহ স্থানীয় পর্যায়ের কোনো নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে না এটাই সরকারের চূড়ান্ত সিন্ধান্ত। সিটি নির্বাচনসহ আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির পক্ষ থেকে সেনা মোতায়েনের দাবি করা হলেও সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের অবস্থান ভিন্ন। তাদের কথা হলো- সেনা বাহিনীর ভাবমর্যাদাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই বিএনপি নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি করছে।
কিন্তু, হঠাৎ করেই বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা জানালেন, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনা বাহিনী মোতায়েন থাকবে।
নির্বাচন কমিশনের এই ঘোষণার পর অনেককেই উচ্ছ্বসিত দেখা যাচ্ছে। ইসির এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করে অনেকেই বলছেন, সেনা মোতায়েন হলে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। এমনকি বিএনপির বড় একটি অংশকেও খুশীতে মাতোয়ারা দেখা যাচ্ছে।
আগামী একাদশ নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হলেই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে আসলে কি তাই? খোঁজ খবর নিয়ে অবশ্য ভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, আগামী নির্বাচনে সেনা বাহিনী মোতায়েনের উদ্দেশ্য অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নয়। সরকারের টার্গেট হলো- সেনা বাহিনী মোতায়েনের কথা বলে খালেদা জিয়াকে ছাড়াই বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে আসা। কারণ, বিএনপির অন্যতম একটি দাবি হলো আগামী নির্বাচনে সেনা মোতায়েন।
জানা গেছে, আগামী নির্বাচনের আগে বর্তমান সেনা প্রধান শফিউল হককে বিদায় করে তার স্থলে বিজিবির সাবেক ডিজি আব্দুল আজিজকে সেনা প্রধান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের সময় এম আজিজ বিজিবির ডিজি ছিলেন। বিজিবির সহযোগিতায়ই মূলত আওয়ামী লীগ তখন একতরফা নির্বাচন করতে পেরেছিল। অনুগত সেই আজিজকেই সরকার আগামী নির্বাচনের আগে সেনা প্রধান করবে। যাতে ৫ জানুয়ারির মতো আরেকটি একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের কাজ সম্পন্ন করতে পারে। আজিজের ছোট ভাই শীর্ষ সন্ত্রাসী তোফায়েল আহমেদ জোসেফকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমায় মুক্তি দিয়ে বিদেশ পাঠানো একই সূত্রে গাঁথা।
তারপর, আগামী নির্বাচনে কোনো সহিংস কর্মকাণ্ড না ঘটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বাহ্যিকভাবে নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ। ভোটাররা বিএনপি-জামায়াতকে ভোট দেয়ারও সুযোগ পাবে। কিন্তু, বিজয়ী হবে আওয়ামী লীগের নৌকা। অর্থাৎ-শান্তিপূর্ণ ভোট ডাকাতির জন্য যা যা করার দরকার সরকার সব কিছুই করবে। এটাই তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। বিএনপি-জামায়াতকে তারা কোনোভাবেই ক্ষমতায় আসতে দিবে না।
রাজনীতিক বিশ্লেষকরাও মনে করছেন, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে গেলেই বিএনপির জন্য হবে সেটা আত্মঘাতি। আগামী নির্বাচনে সেনা বাহিনী মোতায়েন হলেও সরকার তাদেরকে সেই ক্ষমতা দিবে না। আর এম এ আজিজ যদি সেনা প্রধান হন, তাহলেতো আর কথায় নেই। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনের মতো সেনা বাহিনীই সব সিস্টেম করে দেবে।