তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে মাঠের মধ্যে প্যান্ডেল তৈরি করে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা সদরে স্থানীয় সাংসদ ম ম আমজাদ হোসেন মেজবান করেছেন। এতে প্রায় চার হাজার মানুষ ছিল। সপরিবারে হজব্রত পালনের উদ্দেশে এই মেজবানের আয়োজন করা হয়।
জানা গেছে, সাংসদ, তাঁর স্ত্রী ডেইজি মিলন, দুই ছেলে ম ম জাকির হোসেন জুয়েল ও ম ম জার্জিয়াস মিলন রুবেল হজব্রত পালনের জন্য ২৪ জুলাই মক্কা ও মদিনা যাবেন। সে জন্য আজ এই মেজবান ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তাড়াশ ডিগ্রি কলেজ, ইসলামিয়া পাইলট উচ্চবিদ্যালয় ও তাড়াশ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ একটিই। এই মাঠের মধ্যে বিশাল প্যান্ডেল তৈরির পাশাপাশি এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কক্ষের ভেতরেও আমন্ত্রিত অতিথিদের খাওয়ানো হয়। অতিথিদের জন্য পাঁচটি গরু ও পাঁচটি ছাগল জবাই দেওয়া হয়। এর জন্য গত সোমবার থেকে প্যান্ডেল তৈরির কাজ শুরু হয়।
এ বিষয়ে তাড়াশ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুলের অফিস খোলা রয়েছে, মাঠে এমপি সাহেবের অনুষ্ঠান চলছে। তিনি আমাদের সহযোগিতা চেয়েছেন। তাই স্কুল সাময়িক বন্ধ রেখে সহযোগিতা করা হচ্ছে।’
তাড়াশ ইসলামিয়া পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুস সালাম বলেন, ‘বেলা একটায় চলমান অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর থেকে বিদ্যালয়ের মাঠ সংসদ সদস্যকে মেজবানির জন্য ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছে। এতে তেমন কোনো অসুবিধা হয়নি।’
তাড়াশ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘সাংসদের মেজবানের কারণে কলেজ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়।’
এ বিষয়ে সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেন বলেন, ‘আমি কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ করিনি। কলেজের অধ্যক্ষের অনুমতি নিয়েই অনুষ্ঠান করেছি। তা ছাড়া কলেজের কক্ষ ছাড়া অন্য কোনো কক্ষ মেজবানের কাজে ব্যবহার করা হয়নি। তবে খাওয়ানোর জন্য মাঠ ব্যবহার করা হয়।’
সংসদ সদস্য বলেন, মেজবানির জন্য কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে কি না, তা তাঁর জানা নেই। তিনি বলেন, মেজবানে তাড়াশ, রায়গঞ্জ ও সলঙ্গা থানার বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এসেছেন।
এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার (ভূমি) মনছুর উদ্দিন বলেন, তিনি সরকারি কাজে সারা দিন তাড়াশের বাইরে ছিলেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে মেজবানির বিষয়টি তাঁর জানা নেই। খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিউল্লাহ বলেন, তিনি এডিবির অতিথিদের সঙ্গে বাইরে ছিলেন। এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
সূত্র: প্রথম আলো
Discussion about this post