অ্যনালাইসিস বিডি ডেস্ক
সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে সরকারের মন্ত্রীরা গণমাধ্যমের সামনে মায়াকান্না করলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। সত্যিকার অর্থে মহামারি এই করোনা নিয়ে সরকারের কোনো মাথা ব্যথা নেই। দেশবাসীর নিরাপত্তা ও জীবনের চেয়ে শেখ হাসিনার কাছে মুজিব শতবর্ষের গুরুত্ব অনেক বেশি। ১৭ তারিখে আওয়ামী লীগের সরকারের কর্মকাণ্ড এটাই প্রমাণ করছে।
মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে সারা বিশ্ব বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। একটি দেশের সঙ্গে আরেকটি দেশের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। করোনার ধাক্কা লেগেছে বাংলাদেশেও। সরকারি হিসেবে আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ জন। প্রতিদিন বাড়ছে এ সংখ্যা। সারাদেশের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা লকডাউন করে দেয়া হয়েছে।
কিন্তু লক্ষণীয় বিষয় হলো, জাতির এই কঠিন সংকটের মধ্যেও শেখ হাসিনা তার বাবার গুণগান গাওয়ার জন্য সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকেছেন। আগামী রোববার থেকে বিশেষ এই অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা। এই অধিবেশনে শেখ হাসিনার এমপি মন্ত্রীরা তার বাবার স্মৃতি চারণ করবেন। সেই বাকশালের হাকিকত ও ফজিলতের বর্ণনা দেবেন।
এদিকে জাতির এই মহাসংকটের মধ্য মুজিববর্ষের উৎসব নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও রাজনীতিক বিশ্লেষক ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ কঠোর সমালোচনা করছেন।অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন দেশের এই পরিস্থিতে মুজিববর্ষের জন্য বিশেষ অধিবেশন কি খুবই জরুরী?
বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতির এই কঠিন মুহূর্তে মুজিববর্ষ বাদ দিয়ে সরকার মহামারি করোনা নিয়ে একটি বিশেষ অধিবেশন ডাকতে পারতো। কিন্তু তা না করে আতঙ্কের মধ্যেই উৎসবের আয়োজন করছে। যা দেশ ও জাতির সাথে তামাশা ছাড়া আর কিছু নয়। করোনা আতঙ্কের মুজিববর্ষের নামে বিশেষ অধিবেশন ডাকা প্রমাণ করে করোনা নিয়ে সরকার যা করছে সেটা লোক দেখানো কাজ। সত্যিকার অর্থে দেশের মানুষের প্রতি শেখ হাসিনার কোনো ভালবাসা ও দাযিত্ববোধ নেই।
তারা বলছেন, এই অধিবেশনের জন্য সাংবিধানিক ৬০ দিনের কোন বাধ্যবাধকতার বিষয়ও নেই। রাষ্ট্রপতি আহবান করেছেন, আবার রাষ্ট্রপতি অনিবার্য কারণে সেটি সংবিধানের ক্ষমতাবলেই বাতিল করতে পারেন। করোনার ব্যাপারে সংসদ থেকে কথা বলে জনসচেতনা তৈরীর কোন প্রয়োজনীয়তা নেই বলে মনে করছেন তারা। এছাড়া করোনা মোকাবিলায় জরুরি কোন আইন বা বিধির প্রয়োজন হলে সেটাও রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে করার সুযোগ রয়েছে বলে জানান বিশ্লেষকরা।
জানা গেছে, করোনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় মাদারীপুর, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলা যেকোনো সময় লকডাউনের ঘোষণা দেয়া হবে। করোনা আতঙ্কায় রাজশাহী থেকে সব ধরণের দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।এছাড়া আরও কয়েকটি জেলা যেকোনো সময় লকডাউন হয়ে যেতে পারে।